বাংলায় আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি আসন ভাগাভাগি কার্যত অসম্ভব! এমতাবস্থায় ত্রিশঙ্কু লড়াই হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঠিক তখনই বিজেপিকে একমাত্র বিরোধী বিকল্প হিসেবে তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 'হিরকরানি বাই বাই' প্রচার অভিযান সূচনা করে তিনি বলেন,'যাঁরা নো ভোট টু মমতা চান তাঁরা বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির কথা ভাবুন।'
গত বিধানসভা ভোটে 'নো ভোট টু বিজেপি' প্রচারাভিযান শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। এই প্রচারের নেপথ্যে বামেরাই ছিল বলে অভিযোগ বিজেপি শিবিরের। তাতে সুবিধা পেয়ে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার লোকসভা ভোটের আগে শুভেন্দু বার্তা দিলেন,'নো ভোট টু মমতা'। শুভেন্দু বলেন, যাঁরা নো ভোট টু মমতা করতে তাঁদের বলব, বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি নিজেদের প্রমাণ করেছে। প্রতিটা ইস্যুতে জনস্বার্থে বিজেপি লড়াই করছে। অপ্রতিরোধ্য, নির্ভরযোগ্য এবং শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছে। অত্যাচারী, ব্যাভিচারী, পরিবারবাদী, তোষণকারী ও দুর্নীতিগ্রস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমূলে উৎখাত করার জন্য আমাদের পাশে থাকুন'।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের আসন সমঝোতা হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, ৪২টি আসনেই প্রার্থী দেবে তৃণমূল। তবে কংগ্রেস আশাবাদী। তারা চাইছে, মমতা থাকুন। আসন সমঝোতা ভেস্তে গেলে কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে কথা হতে পারে। আর তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট হলে সিপিএম ও বামদলগুলি আলাদা লড়াই করবে। ফলে ত্রিশঙ্কু লড়াই যে হতে চলেছে তা বলে দেওয়া যায়। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি মমতা বিরোধী ভোটকে বিজেপির দিকে টানার কৌশল নিচ্ছেন শুভেন্দু? বিরোধী ভোগ ভাগ হলে সুবিধা হবে তৃণমূলের। তাই বিজেপিকেই একমাত্র বিকল্প হিসেবে তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা।
সিপিএম অবশ্য অভিযোগ করেছে, তৃণমূল বনাম বিজেপি ন্যারেটিভ তৈরির চেষ্টা চলছে। যা আগেও হয়েছিল। বিজেপির মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী বলেন,'আমরা বলতে চাইছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটিও ভোট নয়। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ফানুস তৈরি করে রাখছেন, তা শুধু পরিবারকেন্দ্রিক। আর সিপিএম নেতারা তো ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে থেকেছেন। সেই জোটেও আছে তৃণমূল। অন্যদিকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা মমতার সঙ্গে জোটে ইচ্ছুক। তাহলে তলায় তলায় কাদের সেটিং, তা তো বোঝাই যাচ্ছে।