জয়নগর কাণ্ডে অপরাধীর ৩ মাসের মধ্যে ফাঁসির সাজা হবে। রবিবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনস-র পুজো উদ্বোধনে গিয়ে এই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরাধ করলে তার সাজা হবেই বলে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও প্রতিবাদ নিয়ে তিনি পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তাঁর দাবি, বাংলায় কিছু ঘটলেই প্রতিবাদে নামা হচ্ছে। অপরাধ না জেনেও প্রতিবাদে নামছেন অনেকে।
তিনি বলেন, 'কী কারণে সিরিয়ালে এত অপরাধ দেখানো হয়? বড় বড় অপরাধ করে সব স্টার হয়ে গিয়েছে। দু-একটা ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়েই বড় বড় কথা বলছে। ভুল খবর ছড়ালেই ফেক লিখবেন। কেউ কেউ ফেক ওয়েলফেয়ার কমিটির নামে বদলাম করে। যে অন্যায় করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২১ জুলাই করি বলে অনেক কথা বলে। বাংলায় দুটো ঘটনা ঘটলেই চিৎকার হয়। কেউ কি ইচ্ছা করে ঘটনা ঘটায়? বাংলায় কিছু হলেই প্রতিবাদ হচ্ছে। অন্যায় না জানলেও অপরাধী হয়ে যাচ্ছে অনেকে। যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ভুয়ো খবর দিতে পারলে পুরস্কার ও চাকরি দেওয়া হবে।'
শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি জলাভূমি থেকে উদ্ধার হয় ৯ বছরের ওই নাবালিকার দেহ। শনিবার সকাল থেকেই এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। মহিষমারি ফাঁড়িতে ভাঙচুর চলে। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে RAF নামাতে হয়। পুলিশ এই ঘটনায় মোস্তাকিন সর্দার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। যদিও মোস্তাকিন জানায় যে সে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু চেষ্টায় বাধা দিলে ওই নাবালিকাকে হত্যা করে। পুলিশ সূত্র ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছে, এরপর সে খুন করে দেহটি কাছের একটি খালে ফেলে দেয়। ঘটনায় ইতিমধ্যেই একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে। অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছে যে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি মার্কেটের কাছে মেয়েটি টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার সময় তার মুখোমুখি হয়। তারপর সে একটি নির্জন কৃষি জমিতে ওই নাবালিকাকে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। নির্যাতিতা চেষ্টায় বাধা দিলে অভিযুক্ত তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার লাশ খালে ফেলে দেয়।
এদিক, নাবালিকার দেহের ময়নাতদন্ত কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের আরও নির্দেশ, কল্যাণী এমস-র চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করবেন। বারুইপুর কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। ময়নাতদন্ত কক্ষের বাইরে মেয়েটির বাবা ও মা থাকতে পারবেন। রবিবার মামলার শুনানিতে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশও। কেন পকসো আইনে মামলা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এর পরেই পুলিশকে পকসো আইনের ধারা যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।