রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন খুব বেশিদিন নয়। মাত্র ২৫ বছর বয়সে ভোটে নেমেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন মধুপর্ণা ঠাকুর। সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে জিতে বিধানসভায় রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হয়েছেন মতুয়া পরিবারের সদস্য এবং তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর। ১৩ বছর পর বাগদা কেন্দ্রে তাঁর হাত ধরেই ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মধুপর্ণাকেই এবার দেখা গেল একুশের মঞ্চে।
রাজ্য বিধানসভার কনিষ্ঠতম বিধায়ক মধুপর্ণা দেশের সবচেয়ে কমবয়সী বিধায়কের তকমাও পেয়েছেন। ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশে যোগ দিয়ে মধুপর্ণা বলেন, "প্রথমত আমি ধন্যবাদ জানাব যে এত কম বয়সে আমাকে এত বড় সুযোগ দিয়েছে যে, আমি এখানে এসে এই শহিদ দিবসের মঞ্চে উঠতে পারব। এর থেকে বড় পাওনা আমাদের হরিগুরুচাঁদের হয় না। এত কম বয়সে এতদূর এগোতে পেরেছি, এটাই সব থেকে বড় পাওনা।"
প্রথমবার মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে মধুপর্ণা বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে নারীশক্তি নিয়ে কথা বলে। অথচ গত ৭ এপ্রিল বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, আমার দাদা, মাঝরাতে আমার বিধবা মা, আমাকে ঘর থেকে বার করে দিয়েছিলেন। সেই জবাব বিজেপি দেয়নি। আপনাদের ক্ষমতা নেই মমতার সামনে দাঁড়াবেন।’’ এরপরেই মধুপর্ণা যোগ করেন 'ডায়বেটিস সুগার রয়েছে আমার দাদা শান্তনু ঠাকুর। আগামী লোকসভা নির্বাচনে আপনার হয়ে বাংলায় ঘুরবে এই বোন, পরের বার আপনি বসে থাকুন, আমাকে দায়িত্ব দিন।' মাঝে আজানের জন্য বক্তৃতা থামিয়ে দেন মধুপর্ণা। তার পর সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করেন বক্তৃতা।
প্রসঙ্গত বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির বিনয় কুমার বিশ্বাসকে ৩৩ হাজাররও বেশি ভোটে হারিয়েছেন মধুপর্ণা। তিনি ১ লক্ষ ৭৭ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। মধুপর্ণা ঠাকুর তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যসভার সদস্য মমতা ঠাকুরের মেয়ে। মধুপর্ণার জয়ের পরই তালা ভেঙে বড়মার মন্দিরের দখল নেয় তৃণমূল। বিধানসভার কনিষ্ঠতম সদস্য মধুপর্ণা-ই এখন তৃণমূলের শিবিরের নতুন মতুয়া-মুখ। উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। শুধু গত বিধানসভাই নয়, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও বাগদায় ২০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেখান থেকে মধুপর্ণার 'বাগদা' জয় নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। কারণ পিছিয়ে পড়া আসনটি নিজেদের দখলে নেওয়াটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। সেই কারণেই প্রার্থী নির্বাচনে বিশেষ নজর দিয়েছিল ঘাসফুল শিবির।