'ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেফতার করুন।' সকালে স্ত্রী রুজিরাকে ইডি তলব করার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চ্যালেঞ্জ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বললেন,'নবজোয়ার যাত্রা যবে থেকে শুরু হয়েছে কখনও কয়লা কেসে সমন, কখনও এসএসসিতে সমন। আমার পরিবারকেও ছাড়ছে না। তা সত্ত্বেও মাথানত করব না।'
সোমবার সকাল ৭টায় দুই সন্তানকে নিয়ে দুবাই যাচ্ছিলেন রুজিরা। কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে আটকায় অভিবাসন দফতর। তার পর বিমানবন্দরে ছেড়ে বেরিয়ে যান অভিষেক-পত্নী। এ দিনই রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস দেয় ইডি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি পিছু হঠবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়,'আমি মরে যাব তা-ও মাথানত করব না। কত ক্ষমতা আছে প্রয়োগ করুন। আমার স্ত্রীকে বা আমার ৩ বছরের ছেলেকে ধরে জেলে ঢোকান। তা-ও মাথানত করব না। এটাই আমার আর ওদের পার্থক্য। আপনি ক্ষমতা থাকলে করুন।'
অভিবাসন দফতর সূত্রের খবর,কয়লা পাচারের একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছিল ইডি। সে কারণেই রুজিরার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা। অভিষেকের দাবি,'এই দেশে আইনের শাসন নেই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানে না। আমার স্ত্রী যে যাচ্ছেন তা ৩ জুন জানানো হয়েছিল। খারাপ অভিসন্ধি হলে জানাতাম না। সমন দেওয়ার থাকলে ৩ বা ৪ তারিখ পাঠান। মেলে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, ৫ থেকে ১৩ তারিখ দেশে থাকবে না। গত জুন মাসে ডাকা হয়েছিল। প্রায় ১২ মাস ডাকেনি। জনজোয়ারকে বিঘ্নিত করতে মানসিক হয়রানি করছে। আমার মেরুদণ্ড সোজা। আমার ছোট বাচ্চা ৩ বছরের ছেলে, ৯ বছরের মেয়ে, তাদের অপরাধ কী?'
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে অভিষেক বলেন,'নরেন্দ্র মোদীকে সম্মান জানিয়ে বলছি, আমার বয়স ৩৬, আপনার ৭২। আমার সঙ্গে লড়াই করতে পারছেন না। আমার স্ত্রী, বাচ্চাদের টার্গেট করছেন। গলা কেটে দিলেও মাথানত করব না।'
এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'ও একটা পঞ্জাবি মেয়ে। ওর মা খুব অসুস্থ। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন দেওয়া ছিল। যদি কখনও বাইরে যায় ইডি-কে জানাতে বলা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ইডি-কে জানিয়েছিল অনেকদিন আগেই। তখন ইডি বলতে পারত, তুমি যেও না। কিন্তু এয়ারপোর্টে গিয়ে হাতে নোটিস ধরানো যে ৮ তারিখে তুমি এসো। অমানবিক জিনিস চলছে। এখন মানুষকে সাহায্য করার পরিবর্তে কী দানব-দৈত্যগিরি করা যায় সেদিকে এদের চোখ।'সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন,'একদিকে মৃত্যুমিছিল চলছে, কোনও লজ্জা নেই, কোনও সমবেদনা নেই। মৃত্যুমিছিলে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ধামাচাপা দিতে চাইছে। আমি এই প্রতিযোগিতায় যেতে চাই না। আমি সবসময় মানুষকে সাহায্য করতে চাই।'