Advertisement

Firhad Hakim Controversy: তৃণমূলে অভিমানী মমতা ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ! একের পর এক ঘটনায় কীসের ইঙ্গিত?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ নেতা বলেই তৃণমূলে পরিচিত ফিরহাদ হাকিম। নেত্রীর অত্যন্ত ভরসার লোকও তিনিই। অতিসম্প্রতি একাধিক ঘটনায় জল্পনা শুরু হয়েছে, তৃণমূলে ফিরহাদ কি গুরুত্ব হারাচ্ছেন? এর মধ্যে অন্যতম ঘটনা পার্কিং ফি নিয়ে বিতর্ক।

ফিরহাদ ও মমতাফিরহাদ ও মমতা
শুভঙ্কর মিত্র
  • কলকাতা ,
  • 10 Apr 2023,
  • अपडेटेड 2:50 PM IST
  • তৃণমূলে কি কোণঠাসা ফিরহাদ?
  • ঘটনাক্রম সে দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ফিরহাদ কি অভিমানী? কলকাতার মেয়রের মন্তব্যে তৈরি হয়েছে এমন জল্পনাই। রবিবার চেতলার একটি অনুষ্ঠানে ফিরহাদ ঠারেঠোরে সরে যাওয়ারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,'আজকে এই বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা রয়েছে, এরা কাল সমাজের মাথা হবে। তারা উন্নয়ন করবে, এগিয়ে যাবে। তাদের মধ্যে দিয়ে আবার এই চেতলায় একটা নতুন ববি হাকিম আসবে।' ঘটনাক্রম ইঙ্গিত করছে, তৃণমূলের অন্দরে হয়তো খানিকটা গুরুত্ব হারাচ্ছেন মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেতা। কী সেই ঘটনাক্রম? 

 ঠিক কী বলেছেন ফিরহাদ হাকিম? 

কলকাতার মেয়র মন্তব্য করেছেন,'প্রায় ২৫ বছর আমি এখানকার কাউন্সিলর। ২৫ বছর ধরে আপনাদের সেবা করেছি। নিশ্চিতভাবে বয়স হয়ে গিয়েছে। এখুনি শ্মশান থেকে এলাম। আমার পাশে বাড়ির এক দাদাকে রেখে এলাম। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে আমারও শেষ সময় এসে যাবে। মানুষ আসবে, মানুষ যাবে। সমাজ থাকবে, উন্নয়ন থাকবে। আজকে এই বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা রয়েছে, এরা কাল সমাজের মাথা হবে। তারা উন্নয়ন করবে, এগিয়ে যাবে। তাদের মধ্যে দিয়ে আবার এই চেতলায় একটা নতুন ববি হাকিম আসবে।'

আরও পড়ুন

কেন সরে যাওয়ার ভাবনা ফিরহাদের? 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ নেতা বলেই তৃণমূলে পরিচিত ফিরহাদ হাকিম। নেত্রীর অত্যন্ত ভরসার লোকও তিনিই। অতিসম্প্রতি একাধিক ঘটনায় জল্পনা শুরু হয়েছে, তৃণমূলে ফিরহাদ কি গুরুত্ব হারাচ্ছেন? এর মধ্যে অন্যতম ঘটনা পার্কিং ফি নিয়ে বিতর্ক। কলকাতায় পার্কিং বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। এক সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে শুক্রবার কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন,'এই সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছিল না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি মমতার গোচরে আনেন। তার পর ফোন করে নেত্রী ফিরহাদকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন।' 

সেটা যে ফিরহাদের ভালো লাগেনি তা বুঝিয়ে দেন কলকাতার মেয়র। একটি সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছিলেন,'এভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রকাশ্যে না বললেই ভাল হত। দলের ভিতরেও বলা যেত।' তার পর এনিয়ে কোনও সংবাদ মাধ্যমে মুখ খোলেননি মেয়র। প্রতি শুক্রবার 'টক টু মেয়র'  কর্মসূচি করেন ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সরকারি ছুটি থাকলে শনিবার নাগরিকদের সমস্যার কথা শোনেন। এই শনিবার সেই কর্মসূচি হয়নি। তার পর রবিবার ফিরহাদ উবাচ। 

Advertisement

বস্তুত এই ঘটনাই নয়, তৃণমূলে 'এক ব্যক্তি এক পদ নীতি'তে পুরসভার মেয়র হওয়া আটকে গিয়েছিল ফিরহাদের। কারণ তিনি একাধারে বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপেই পুরসভার টিকিট পান, মেয়রও হন। অতিসম্প্রতি পরিবহণমন্ত্রক তাঁর হাত থেকে চলে গিয়েছে। এখন নগরোন্নয়নমন্ত্রক সামলাচ্ছেন। সাগরদিঘির হারের পর ফুরফুরা শরিফের উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকেও সরানো হয়েছে তাঁকে। সরকারি কর্মীদের ডিএ আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করায় সেন্সর করা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে খোদ নেত্রী তাঁকে পুরসভা ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে মুখ খুলতে বারণ করেছেন। তার পর দলের মুখপাত্রদের তালিকা থেকেও বাদ পড়েন ফিরহাদ। ঘটনাক্রমই ইঙ্গিত করছে, কোণাঠাসা হচ্ছেন ফিরহাদ। সে কারণেই রবিবারের ফিরহাদ-উবাচ। 

পার্কিং ফি বিতর্কের পর তৃণমূলে নব্য-আদির বিবাদ উস্কে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়,'এতে বোঝা যাচ্ছে যে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে ফিরহাদ হাকিম সাহেবের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নেই। এটা হতে পারে না, উনি মুখ্যমন্ত্রীকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানতেন, হয়তো ভাইপো জানত না। ভাইপোর মনে হয়েছে না, এটা করা যাবে না। সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে। আস্তে আস্তে ক্ষমতাটা পুরনো তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের হাত থেকে নব্য তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের হাতে চলে যাচ্ছে। যারা ভাইপোপন্থী।'

সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া,'উনি জীবনদর্শনের কথা বলেছেন। তার সঙ্গে চলতি কোনও ইস্যু দেখতে পাচ্ছি না। এটা একেবারে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জীবনদর্শন। একজন সিনিয়র মানুষ সেই জীবনদর্শনের কথা বলেছেন। এর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দেখতে পাচ্ছি না।'

 

Read more!
Advertisement
Advertisement