নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কয়েক মাসেই জীবন বদলে গিয়েছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের জীবন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলে থাকাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হল বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা’র দলীয় কার্যালয়। তাঁর দলীয় কার্যালয়টি সরকারি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে বলে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টের নির্দেশেই তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে তার দলীয় কার্যালয়। এই নিয়েই এবার প্রতিক্রিয়া দলেন তৃণমূল বিধায়ক। বললেন,'যেগুলো বেআইনি সেগুলো তো ভেঙে দেওয়াই হবে।'
বৃহস্পতিবার আলিপুর স্পেশাল সিবিআই আদালতে প্রবেশ করানো হয় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাসহ ৯ জনকে। আদালতের লকআপে প্রবেশ করার সময় জীবনকৃষ্ণকে তাঁর অফিস ভেঙে দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'বেআইনি হলে তা তো ভাঙবেই।’ পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক দাবি করেন, ওই অফিস তাঁর ছিল না। কোনও বেআইনি কাজ করতেন কি না? এই প্রশ্নের উত্তর সন্তর্পণে এড়িয়েই যেতে দেখা যায় তৃণমূল বিধায়ককে। বদলে তিনি বলেন, ‘ওটা আমার অফিস নয়। কে বলল ওটা আমার অফিস?’ এর পরই আদালতের ভিতরে চলে যান জীবনকৃষ্ণ।
প্রসঙ্গত বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ওঠার পর হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আফ্রিকা মোড়ের সাতটি দোকান সম্প্রতি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, তারই মধ্যে একটিতে মাঝেমধ্যে বসতেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এই দোকানঘরটিকেই নাকি নির্বাচনী কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের আফ্রিকা মোড় সংলগ্ন এলাকায় ২০২১ সালে নির্মিত হওয়া ভবনটি বিধায়ক কার্যালয় তথা তৃণমূল ভবন নামেই পরিচিত ছিল। তবে ভবনটি নির্মাণ হওয়ার পরই স্থানীয় এক বাসিন্দা এই ভবনটি সরকারি জায়গায় রয়েছে বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। গত বছর ডিসেম্বরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ মতোই ভবনটি ভাঙার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি শুরু হয়। তবে ভবনটি ভাঙতে গিয়েই প্রশাসন ও পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় পূর্ত দফতরকে। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। তারপর ডিভিশন বেঞ্চও দলীয় কার্যালয় ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়।
রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গত ১৭ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার আগে প্রায় ৬৫ ঘণ্টা ধরে তাঁর দফতর-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলে। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় জীবনকৃষ্ণকে।