তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করেছেন তাপস রায়। সেই আবস্থানে অনড়ও রয়েছেন বরানগরের বিধায়ক। বৃহস্পতিবারও বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাপস রায় বুঝিয়ে দেন, উত্তর কলকাতার সাংসদের বিরুদ্ধে আক্রমণের রাস্তা থেকে কোনওভাবেই তিনি পিছু হটছেন না। তাপস রায়ের বক্তব্য, শব্দব্রহ্ম কীভাবে ফেরত নেব? নাম না করে সুদীপকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, বারবার অসম্মান করেছেন। ২০০৯ সাল থেকে উনি বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। উত্তর কলকাতার তৃণমূল কর্মীরা সব জানেন।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম তাপস রায় বিতর্কে বরানগরের বিধায়কের পাশে দাঁড়াতেই দেখা গেছে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে। তাঁর দাবি, দলকে না জানিয়ে এ ভাবে বিরোধী দলের নেতার বাড়িতে যাওয়া উচিত নয়। এই বিতর্কে লোকসভার সতীর্থ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াননি দমদমের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ও। সৌগত বলেন, ‘দলে থেকে এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে কর্মী–সমর্থকদের মনে আঘাত লাগে। তাই তো আমি নিজের দাদার বাড়িতেই যাই না। কারণ তিনি বিজেপি করেন।' এদিকে তাঁকে নিয়ে যখন মুখ খুলছেন সহকর্মীরা তখন ভবানীপুরে দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসনের একেবারে পাশেই দেখা যায় সুদীপ-জায়া তথা চৌরঙ্গির বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তাঁকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের মাঝেই বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন সুদীপ।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি তপন ঘোষের বাড়ির পুজোয় যাই। শুভেন্দু (অধিকারী), কল্যাণ চৌবে এরা কে? ।’’ এদিন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা বলেন, ‘‘আমি যে বাড়ির পুজোয় যাই, সেটা তপন ঘোষের পুজো। উনি ৭৬ বছরের বয়স্ক ব্যক্তি। বিবেকও (তৃণমূল সাংসদ বিবেক গুপ্ত) যান, শশী পাঁজারাও যান। এ বার পুজোয় আমিও তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমি যখন গিয়েছিলাম শুভেন্দু, কল্যাণ চৌবেরা ছিলেন না। যাঁর বাড়ির পুজো বলা হচ্ছে, তিনিও তখন ছিলেন না। একা তপন ঘোষই ছিলেন।’’ বুধবার একটি সংবাদমাধ্যমকে সুদীপ বলেছিলেন, ‘‘হাতি চলে বাজার... কী একটা কথা আছে না। নো কমেন্টস।’’বৃহস্পতিবার সেই মন্তব্যই প্রকাশ্যে করতে দেখা গেল তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ... হাতি চলে বাজার...। আমি কালকও বলেছিলাম। ইউটিউবেও এসে গিয়েছে বোধহয়।’’ এই মন্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ, কার উদ্দেশে? তা নিয়ে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার নিজেকে দেখিয়ে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা, ‘‘এই যে হাতি চলছে...।’’ এর পরেই তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমি এমনিতেই সকলের কথার জবাব দিই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় কিছু বলার নির্দেশ দিলে আমি বলি। এই বিতর্ক নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই।’’