সুকান্ত মজুমদারের 'বিবেকানন্দ বিতর্কে'র প্রতিবাদ। মঙ্গলবার শ্যামবাজার থেকে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার মিছিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলের নেতৃত্ব দেন মন্ত্রী শশী পাঁজা ও সায়নী ঘোষ। গীতাপাঠ-ফুটবল নিয়ে মন্তব্যের প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে শহরের রাস্তায় ফুটবলও খেলেন শশী-সায়নী। ফুটবল হাতে নিয়েই মিছিলে হাঁটেন তাঁরা।
মিছিল শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সায়নী ঘোষ। তিনি বলেন, 'আজ বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অত্যন্ত শিক্ষিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে বিকৃত মন্তব্য করেছেন। এত পড়াশোনা করার পরেও তাঁর মধ্যে এক হিপোক্রেসি রয়ে গিয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দের মন্তব্যের একটি অংশ বের করে তিনি বিকৃত করছেন। আসলে ফুটবল শুনলেই বিজেপি রেগে যায়। কারণ এর আগে বিজেপি ভোটে এত গোল খেয়েছে, সেই কারণেই ফুটবল শুনলেই ওদের মধ্যে চিড়বিড়ানি শুরু হয়ে যায়।'
সায়নী আরও বলেন, 'লোকসভা ভোট এগিয়ে আসছে। ওঁরা ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। কিন্তু এভাবে এগোলে সাড়ে ৩টিও আসন পাবে না বিজেপি। রবীন্দ্রনাথ বিজেপির নয়। বিবেকানন্দ বিজেপির নয়।'
বিবেকানন্দ বিতর্কের ব্যাখা করে তিনি বলেন, 'বিবেকানন্দ কখনও বলেননি যে গীতাপাঠ না করে ফুটবল খেল। উনি কর্মযোগের কথা বলেছেন। হিন্দুত্ব শুধুমাত্র পুঁথিগত জ্ঞান নয়। তাই যে কোনও সাধনা করার আগে, গীতার মতো একটা কঠিন বিষয় বোঝার আগে শারীরিকভাবে তৈরি হতে হয়।'
তিনি এক্ষেত্রে ধর্মের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। সায়নী বলেন, 'আসলে বিজেপির সমস্যা, তারা সীতা, গীতা কাউকেই ছাড়ছে না। সবাইকে ধরেই ভোট পেতে চাইছে। কিন্তু বাংলায় এই কালচার চলবে না। ওঁরা যদি ভাবেন বাংলায় গীতাপাঠ হলেই রাজ্যপাট হাতে আসবে, সেটা হবে না।'
কিন্তু এদিনের মিছিলে ফুটবল খেলা হল কেন? এর উত্তরে সায়নী বলেন, 'ফুটবল দেখলেই রেগে যাচ্ছেন সুকান্ত মজুমদার। আসলে আগের বার খেলা হয়েছে। তাতে ভাঙা পায়ে একজন খেলেছেন। আর তাঁর কাছে হেরেছেন সুকান্তবাবুরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২১১ করেছিলেন। দিদি ২১৩। আর সেই কারণেই এখন ফুটবল দেখলেই রেগে যাচ্ছেন। ভুলভাল কথা বলে ফেলছেন।'
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। তিনি বলেন, 'শুধু বাংলা নয়, ভারতবর্ষের যুব আইকন স্বামী বিবেকানন্দ। সেই স্বামীজীর অপমান করেছেন ৪৮ ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে। সেই নিয়ে এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও আক্ষেপ, অনুশোচনা দেখলাম না। বিজেপির ইগো এত বেড়ে গিয়েছে যে স্বামীজীকে নিয়ে এমন বলার মতোও তাই নিয়েও ক্ষমা চাইছে না। বিজেপি সভাপতি শহরে এসেছেন, তৃণমূলের প্রশ্ন, সুকান্ত মজুমদারের ভুল মন্তব্যের জন্য কি তিনি ক্ষমা চাইবেন? নাকি ধরে নেওয়া হবে বিজেপির উচ্চ নেতৃত্ব এর সমর্থন করছে?'