Babul Supriyo Indranil Sen: সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ঠিক সামনেই প্রকাশ্যে রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেল।তাও আবার দুজনেই সুরেলা মন্ত্রী। অর্থাৎ দুজনই গায়ক। আন্দাজ করতে পারছেন, কাদের কথা বলছি? বলা হচ্ছে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং ইন্দ্রনীল সেনের কথা। দুজনকেই উপস্থিত সকলে জোরে কথা বলতে শোনেন। তা যে গল্প নয়, বাদানুবাদ তা বুঝে নিতে কারও বেশি বিলম্ব হওয়ার কথা নয়, কেউ করেনওনি। মুহূর্তে দুজনের বিতণ্ডার কাহিনী চাউর হয়ে পড়ে।
কান পেতে কী শোনা গেল?
ইন্দ্রনীলকে উদ্দেশ্য করে বাবুলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তুমি আমার দফতরের কাজ আটকাচ্ছ কেন? তুমি এ ভাবে সরকারি কাজ আটকে রাখতে পারো না! তুমি ফাইল পাঠানো বন্ধ করে দিলে কাজ হবে কী করে!’’ এর পরে ইন্দ্রনীলও আশপাশের লোকেরা শুনতে পাবেন, এমনভাবেই বলেন, ‘‘তোর যা বলার তুই সেটা দিদিকে গিয়ে বল!’’ পাল্টা বাবুল বলেন, ‘‘সে আমি তো বলেইছি। যদি দরকার মনে করি আবার বলব। কিন্তু তুমি এ ভাবে আমার দফতরের কাজ আটকাতে পারো না।’’ ব্যস মূহূর্তে হাওয়া গরম। আর স্কুপ পেয়ে গেল মিডিয়াও। এরপরই তা যে আরও ছড়াবে, সম্ভবত সেটা বুঝতে পেরেই ইন্দ্রনীল বাবুলকে বলেন, ‘‘এখানে এ ভাবে কথা বলিস না তুই। তোর দফতরের কাজ কেন আটকাতে যাব আমি! বললাম তো, তোর কিছু বলার থাকলে দিদিকে গিয়ে বল।’’
বাবুল সুপ্রিয় বর্তমানে পর্যটনমন্ত্রী। সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দায়িত্বও রয়েছে। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষা এবং তথ্য ও সম্প্রচার দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। দুজনের দফতরে খুব একটা মিল নেই। তবে ইন্দ্রনীল পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান। পাশাপাশি ইন্দ্রনীল পর্যটন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রীও। তাঁর হাত থেকে দফতর নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে ইন্দ্রনীলের মনে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন মমতার ঘরে ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেই বৈঠক অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও তথ্য ও সম্প্রচার দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। বৈঠক শেষে বেরনোর সময় দুই মন্ত্রীর এই কথোপকথন শোনা যায়। চারপাশে তখন সাংবাদিকদের উপস্থিতি। সে সব তোয়াক্কা না করেই চলে চাপান-উতোর। এর আগে বৈঠকে সবার সামনে বাবুলকে ধমক দিতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। পর্যটন নিয়ে কোনও একটি প্রস্তাব দিতেই মমতা থামিয়ে দিয়ে তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি এমন করতে পার না।’ বাবুলকে মন দিয়ে কাজ করার বার্তাও আগে দিয়েছেন মমতা।
জানা গিয়েছে, বাবুল পর্যটন দফতরের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দুজনেই দুজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপর সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পদে ইন্দ্রনীলকে বসিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ বাবুল পর্যটন দফতরের মন্ত্রী আর পর্যটন নিগমের চেয়ারম্যন হলেন ইন্দ্রনীল। বাবুল ঘরোয়াভাবে অভিযোগ করেছেন, তিনি কোনও কাজের নির্দেশ দিলে সেটা নিয়ে অফিসারদের বাধা দিচ্ছেন নিগমের চেয়ারম্যান। এই অভিযোগ আবার অস্বীকার করছেন ইন্দ্রনীল। তবে এ নিয়ে দুজনের কেউই সংবাদমাধ্যমের সামনে সোমবারল রাত পর্যন্ত মুখ খোলেননি।