বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার দম্পতির দেহ। বুধবার রাতে দমদমের ঘটনা। এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, নিহত ওই ব্যক্তির নাম বাসুদেব ব্রক্ষ্ম (৬৫) এবং তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রানী (৫৫)। বাসুদেববাবু রাজ্য সরকারের প্রাক্তন কর্মী। বছর সাতেক আগে তাঁরা দমদমের ফ্ল্যাটে আসেন। তার আগে তাঁরা থাকতেন বিধাননগরে। তাঁরা নিঃসন্তান ছিলেন। বাসুদেববাবুর দেহ উদ্ধার হয় ঝুলন্ত অবস্থায়। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রীকে পাওয়া যায় মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায়।
এদিন তাঁর এক বন্ধু তাকে দুপুরের দিকে বেশ কয়েকবার ফোন করেন কিন্তু তিনি কোনও সাড়া পাননি তারপর বিকেলের দিকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তখন তিনি দেখতে পান দরজা বন্ধ রয়েছে। ডাক দিলেও কেউ সাড়া দিচ্ছে না।
এরপর তিনি বাসুদেববাবুর ছোট ভাইয়ের ফ্ল্যাটে যান। সেটি তার পাশেই রয়েছে। তাকে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানান তখন বাসুদেবপুর ভাই স্থানীয় এবং দমদম থানায় জানানো হয়।
এরপর ভাঙা হয় দরজার ফ্ল্যাট এবং তাঁদের ওই অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ এবং স্থানীয় কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে যান। এরপর পুলিশ দেহ উদ্ধার করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, তারা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
বাসুদেববাবুর আত্মীয় দেবযানী ব্রক্ষ্ম বলেন, রাত আটটা নাগাদ তাঁর এক বন্ধু আমাদের বাড়িতে আসেন। তিনি আমাদের জানান দুপুর থেকে তাঁকে ফোন করছি। কিন্তু কোন সাড়া পাননি। তখন তাকে বলি, আপনি ফ্যাটের বেল বাজিয়ে দেখুন। তিনি জানান, সেটা করেছি। কিন্তু কোনও সাড়া পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, ভেতর থেকে কেউ কোনও জবাব দিচ্ছেন না। মনে সন্দেহ হওয়ায় আমি এরপর বিদায়ী কাউন্সিলর বরুণ নট্টকে খবর দিই। তখন তিনি আমাদের বলেন, দরজা ভাঙুন। এরপর পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মানুষজনও ছিলেন। সবার সাহায্যে দরজা ভেঙে দেখা যায় এই অবস্থা।
এদিন তিনি বলেন, তাঁরা দুজনেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁরা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এটা আগে আমাদের বাড়ি ছিল। তাঁরা এখানে এসেছেন বছর সাতেক আগে। এর আগে তাঁরা থাকতেন বিধাননগরে। তাঁরা সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতেন। আমরা জানি না কী ভাবে এ ঘটনা ঘটে গেল।
বরুণ নট্ট বলেন, এটা আমার ওয়ার্ড। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে ফোন করে জানান, তাঁর দাদা দরজা খুলছেন না। আমি তাঁদের বলি যে ভেতরে দরজা খুলে এখনই আপনারা ভিতরে ঢুকুন। এবং তার কিছুক্ষণ পরে জানতে পারি এই অবস্থা। এরপর আমি সেখানে যাই এবং খবর দেওয়া হয় দমদম থানায়।
তিনি বলেন, আমি এবং দমদম থানার আইসি দুজনে মিলে ভেতরে ঢুকিয়ে দেখতে পাই বাসুদেব ব্রক্ষ্ম ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন। আর তাঁর স্ত্রী মাটিতে পড়ে রয়েছেন। তাঁর গলায় একটা কাটা চিহ্ন রয়েছে। বাসুদেববাবু রাজ্য সরকারের কর্মী ছিলেন। দিন কয়েক আগে অবসর নিয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান, আর কিছুদিন আগে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তার স্ত্রীর চোখে চিকিৎসা হয়েছে কয়েকদিন আগে। তাঁরা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাঁর দুই ভাই এই এলাকাতেই থাকেন। তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয় থাকেন এই অঞ্চলে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে।