টার্গেট ২০২৪। মঙ্গলবার কলকাতায় এসে তা ভালভাবেই বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা। বঙ্গ সফরে এসে শাহ ভেঙে দেন হল পুরনো কোর কমিটি। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৈরি হয়েছে বিজেপির নতুন নির্বাচনী কমিটি। মঙ্গলবার দলের কেন্দ্রীয় নেতা এবং দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার হস্তক্ষেপে এই কোর কমিটি তৈরি হয়েছে ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে। এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এই ধরণের কোনও কমিটি হয়নি বলেই দাবি করছেন সুকান্তবাবু।
শোনা গিয়েছিল, রাজ্যে এসে ১৫ সদস্যের এক ভোট ‘ম্যানেজমেন্ট টিম’ তৈরি করে দিয়েছেন বিজেপির এই দুই শীর্ষ নেতা। সেই কমিটিতে চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির কোর কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের নাম না থাকায়, এই কমিটি নিয়ে চাঞ্চল্যও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরে, সুকান্ত মজুমদার জানালেন, এই ধরনের কোনও কমিটি তৈরি করা হয়নি। বিজেপি রাজ্য সবাপতি বলেন, 'কোনও কমিটি তৈরি হয়নি। রাজ্যের নির্বাচনী কমিটিতে কেন্দ্রের কোনও নেতার নাম থাকে না। সম্ভবত, আজকের বৈঠকে কারা কারা উপস্থিত থাকবেন, সেই লিস্ট আপনারা পেয়েছেন। আগামী দিনের রোডম্যাপ কী হবে চব্বিশের ভোটকে সামনে রেখে সেই কথা বলে গিয়েছেন ওঁরা। যে ৩৫টি সিটের টার্গেট, সেই টার্গেটকে সামনে রেখে আমরা এগোবো।'
কোনও নির্বাচনী কমিটি তৈরি হল কী? এই প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত মজুমদারের দাবি, কমিটি আমাদেরকে তৈরি করতে হবে। বাংলার নেতাদের কমিটি তৈরি করতে হবে। দিল্লির নেতারা ঠিক করবে না। সময় হলে প্রার্থী সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এদিন কুণাল ঘোষের মন্তব্য প্রসঙ্গে সুকান্তবাবু বলেন, ‘আমরা তিন পাবো কিনা জানি না। ৩৫ এর মাঝে দশমিক বসালে ৩.৫ হয়। আর উনি সাড়ে তিন বছর জেল খেটে এসেছেন।আমাদের তিনজন এমএলএ ছিল, সেটা ৭৭ হয়েছে। এবার কি হবে যদি ঐকিক নিয়মে ভাবা যায়।'
সায়নী ঘোষের মন্তব্য প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের জবাব, ‘সায়নীকে আগে বলুন উনি শিবলিঙ্গে কি পরিয়েছিলেন তার জন্য কতবার ক্ষমা চেয়েছেন। তার জন্য ওঁর নাকখত দেওয়া উচিত। সুকান্ত মজুমদার বিবেকানন্দ নিয়ে কিছু বলেননি। ওনাকে আমি চ্যালেঞ্জ করছি উনার যদি দম থাকে তাহলে বিবেকানন্দের যে বাক্য নিয়ে উনারা আন্দোলন করছেন তার আগের চাইল লাইন এবং পরের চার লাইন পোস্ট করতে বলুন।'
রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সিপিএম যাবে না, এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘আমার মনে হয় ভারতের মানুষও আশা করেন না যে সিপিএম যাবে।এটা যদি বাবরি মসজিদের উদ্বোধন হতো তাহলে হয়তো যেতেন।' সিএএ কার্যকর হবেই, এটা জানাতে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘ভারতবর্ষের সংবিধান সম্মত একটি আইন যা দুটি সভাতেই পাস হয়েছে। সিএএ লাগু হবে এবং আমার বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি হবে।'
ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খার্গের নাম প্রস্তাব প্রসঙ্গে সুকান্তর জবাব, ‘মমতা নিজে বুঝতে পেরে গেছেন যে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো জোটের তরফে তাহলে সবার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাফিয়ে পড়তেন। স্বাভাবিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিচ্ছেন যে দুটি মানুষের সম্ভাবনা আছে হয় খার্গে নয় মোদী।' তৃণমূল যুবর ফুটবল খেলে প্রতিবাদ প্রসঙ্গে সুকান্তর জবাব,
‘খেলতে বলুন ফুটবল। বাংলার মানুষ সময় হলে ফুটবলের মতো এদেরকে কিক দেবে।'
লোকসভা নির্বাচনে কোন কোন ইস্যুতে ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি, এই নিয়ে বলতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার জানান, ‘একদিকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতবর্ষের উন্নয়ন আর অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের বাংলার ঘরে ঘরে যে দুর্নীতি নেতা মন্ত্রীদের সেটা নিয়ে প্রচার।'