অরাজনৈতিক বলে দাবি করা হলেও, পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে একটি স্বঘোষিত সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে চড়ছে রাজ্য রাজনীতির পারদ। ইতিমধ্যেই নবান্ন অভিযান ঘিরে একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষকে রাগিয়ে দিয়ে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, দাবি করে বিজেপি ও বামেদের নিশানা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ভিডিও-র সূত্র ধরে দু জন বিজেপি নেতাকে আটকও করেছে পুলিশ। অশান্তি তৈরির চেষ্টা জানিয়ে সাধারণ মানুষকে চক্রান্তের ফাঁদে না দিতে সতর্ক করেছে রাজ্য পুলিশ। এহেন আবহে এবার নবান্ন অভিযানকে খোলাখুলি সমর্থন জানালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একইসঙ্গে দাবি করলেন, ছাত্র সমাজ নামে এই সংগঠনের নবান্ন অভিযানের কর্মসূচির উদ্যোক্তা বিজেপি নয়।
নবান্ন অভিযানে বিজেপির সমর্থন রয়েছে
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে একটি সংগঠন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। এই অভিযানকে ওই সংগঠনের তরফে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বলে দাবি করা হয়েছে। মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করে এই অভিযান। কিন্তু প্রশ্ন হল, বিজেপি কি এই আন্দোলনে সামিল হচ্ছে? আজ অর্থাত্ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুকান্ত বললেন, 'এই আন্দোলন বিজেপি-র আন্দোলন নয়। বিজেপি এই আন্দোলনের উদ্যোক্তা নয়। তবে এই ধরনের যে কোনও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিজেপি-র সমর্থন আছে। থাকবে। প্রয়োজনে আমরা দলমত নির্বিশেষে সমর্থন করব। কিন্তু আমরা এই আন্দোলনের উদ্যোক্তা নই।'
বিজেপি-ও পরবর্তীকালে নবান্ন অভিযান করতে পারে
তৃণমূলের প্রকাশিত ভিডিও প্রসঙ্গে বললেন, 'আমাদের মনে হয়েছে এই ভিডিও নকল। ইচ্ছে করে তৈরি করা হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। ছাত্রদের ভয় দেখাতে এটা করা হয়েছে। এই রকম গণতান্ত্রিক আন্দোলন সিপিএম করলেও, বিজেপি সমর্থন করবে। এই ভাবে ভয় দেখিয়ে ছাত্র আন্দোলনকে ধ্বংস করা হবে, ছাত্রদের উপর দমন পীড়ন করা হবে, তাহলে পরবর্তীকালে বিজেপি নবান্ন অভিযান করবে। পুলিশকে আমি প্রশ্ন করব, ওই ভিডিওটি নিয়ে কী বলবেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে সেমিনার হলে ক্রাইম সিনে মেলার মতো ভিড়। ওই রকম ভাবে ভিড় থাকলে, লোকজন যাতায়াত করলে আর কোনও প্রমাণ অবশিষ্ট থাকে?'
রবিবারের মন্তব্যের পর উল্টো সুর সুকান্তর গলায়
বস্তুত, নবান্ন অভিযান আন্দোলন নিয়ে রবিবার কার্যত অন্য সুর শোনা গিয়েছিল সুকান্তর গলায়। বলেছিলেন, 'মঙ্গলবার অরাজনৈতিক আন্দোলন হচ্ছে, নবান্ন ঘেরাও হচ্ছে। আমার মনে হয়, সেটা অরাজনৈতিক ভাবেই হওয়া উচিত। রাজনৈতিক নেতাদের দূরে থাকাই ভাল।' যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'ছাত্রসমাজ অভিযান ডেকেছে। আমি বলেছি, যদি হয়, নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম পাই, নাগরিক হিসেবে...ওরা তো প্রত্যেক বাড়ি থেকে একজনকে চেয়েছে। আমারও অধিকার আছে আমার বাড়ি থেকে যাওয়ার।'