সকালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিমানবন্দরে আটকায় অভিবাসন দফতর। সেই সঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিসও ধরানো হয়েছে। দুবাইয়ে যাচ্ছিলেন রুজিরা। অভিবাসন দফতর বাধা দেওয়ায় যেতে পারেননি। এবার বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করা হয়েছে। রুজিরাকে এভাবে নোটিস দেওয়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সময়জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগও করলেন।
নবান্নে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মমতা বলেন,'ও একটা পঞ্জাবি মেয়ে। ওর মা খুব অসুস্থ। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন দেওয়া ছিল। যদি কখনও বাইরে যায় ইডি-কে জানাতে বলা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ইডি-কে জানিয়েছিল অনেকদিন আগেই। তখন ইডি বলতে পারত, তুমি যেও না। কিন্তু এয়ারপোর্টে গিয়ে হাতে নোটিস ধরানো যে ৮ তারিখে তুমি এসো। অমানবিক জিনিস চলছে। এখন মানুষকে সাহায্য করার পরিবর্তে কী দানব-দৈত্যগিরি করা যায় সেদিকে এদের চোখ।'সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন,'একদিকে মৃত্যুমিছিল চলছে, কোনও লজ্জা নেই, কোনও সমবেদনা নেই। মৃত্যুমিছিলে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ধামাচাপা দিতে চাইছে। আমি এই প্রতিযোগিতায় যেতে চাই না। আমি সবসময় মানুষকে সাহায্য করতে চাই।'
সোমবার সকাল ৭টায় দুই সন্তানকে নিয়ে দুবাই যাচ্ছিলেন রুজিরা। কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে আটকায় অভিবাসন দফতর। তার পর বিমানবন্দরে ছেড়ে বেরিয়ে যান অভিষেক-পত্নী। অভিবাসন দফতর সূত্রের খবর,কয়লা পাচারের একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছিল ইডি। সে কারণেই রুজিরার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা। তার পরই রুজিকে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস দেয় ইডি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকাল ৭টা নাগাদ দুই সন্তানকে নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছন রুজিরা। দুবাইয়ের বিমান ধরার কথা ছিল তাঁর। তৃণমূল সূত্রের খবর, ইডি-র ওই মামলায় ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে অভিষেক-রুজিরাকে। এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন অভিষেক।
কয়লা পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই একাধিক দফায় অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। দিল্লিতে অভিষেক ও রুজিরাকে তলবও করা হয়েছিল। অভিষেক গিয়েছিলেন। তবে দিল্লির দফতরে যাননি রুজিরা। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছিলেন। অভিষেকের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই বলে গত সেপ্টেম্বরে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে। চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা নেই।