টানা বৃষ্টি ও তিস্তাতে জলস্তর বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ডিভিসি থেকেও জল ছেড়েছে। তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সিকিমে বন্যার ফলে এমনিতেই জলস্তর বেড়েছে তিস্তার। ফলে শঙ্কিত উত্তরবঙ্গের মানুষ। তবে সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আছে। এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, সরকার সব রকমভাবে সাধারণ মানুষের পাশে আছে। নবান্নের আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে বৈঠকে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কারণ সিকিমে মেঘ ফেটেছে। জলস্তর বাড়ছে। সেজন্য জলপাইগুড়ি, কোচবিহার নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে। এদিকে হাওড়ার উদরনারায়ণপুর নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। জানান, ডিভিসি জল ছেড়েছে। ফলে হাওড়ার ওই এলাকা প্লাবিত হতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও কোনও এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জল ঢুকতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে আর্মির সঙ্গে সরকারের কথা হয়েছে। সরকারের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, 'পুজোর মধ্যে এই বিপর্যয়। ভয় পেলে চলবে না। প্রকৃতি তো কারও হাতে নেই। তার সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই মানুষকে ভালোবাসতে হবে। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খুলতে হবে। যাতে মানুষ কোনও বিপদে না পড়েন। ডেঙ্গি যেন না বাড়ে সেদিকেও নজর দিতে হবে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।'
আবার সরকারি কর্মীদের সব ছুটি আপাতত বাতিল করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এও জানান, এই বিপর্যয়ের মধ্যে যেন ডেঙ্গি না বাড়ে সেদিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে তাদের মশারি দিতে হবে। আর বন্যাপ্রবণ এলাকায় যাঁরা থাকেন তাঁদের ত্রাণ দিতে হবে। নিরাপদ জায়গাতে আনতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে ট্যুইটও করেন। তিনি লেখেন,‘মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে সিকিমে হড়পা বানের ফলে ২৩ জন সেনা নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বিষয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সমবেদনা প্রকাশ করছি এবং সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছি। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সকলকে বিপর্যয় রোধে সর্বাধিক সতর্কতা বজায় রাখার জন্যও অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যেই আমি বাংলার মুখ্য সচিবকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা করতে বলেছি। কালিম্পং, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী এবং আইএএস অফিসারদের উদ্ধার ও ত্রাণ তদারকির জন্য উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্যোগে যাতে প্রাণহানি না হয় সেজন্য কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ির কোনও কোনও এলাকায় এমনিতেই জল ঢুকতে শুরু করেছে। কারণ তিস্তায় জল বাড়ার জন্য সমস্ত বাঁধের লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে হুড়মুড়িয়ে জল নেমে আসছে জলপাইগুড়িতে। সেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ফলে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।