বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছল। মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে কড়া ভাষায় নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি রাজ্যপালের কথা শুনে চলে তবে সরকার টাকা মাইনে দেওয়া বন্ধ করে। বৃহস্পতিবার পাল্টা সুর চড়ালেন রাজ্যপাল। এই বিষয়ে তিনি শেষ দেখে ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় বাংলায় রাজ্যপাল বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, 'বাংলায় জন্য কিছু ভাল কাজ করতে চাই, আমার মতে বাংলার নতুন প্রজন্ম হল বাংলার সম্পদ। এই নতুন প্রজন্মের অনেকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দুর্নীাতিমুক্ত ও হিংসামুক্ত হওয়া খুবই প্রয়োজন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। আমি চাই এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভারতের সেরা হোক। আমার মতে এটা অবশ্যই সম্ভব। কারণ আমাদের মেধাবী ছাত্র আছে, আমাদের মহাগুণী অধ্যাপকরা আছেন। বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বেস্ট বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে।'
এরপরই রাজ্যপাল বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভালভাবে চলার জন্য চাই উপাচার্য। বাংলার শিক্ষা দফতর উপাচার্য নিয়োগ করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেই নিয়োগকে ভুল বলেছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে শিক্ষা দফতরের এই নিয়োগ বেআইনি। সব ভিসি-কে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবস্থায় আমি ভিসি নিয়োগ করি। শিক্ষা দফতর বলল এটা ভুল, তবে কলকাতা হাইকোর্ট বলল এটা ঠিক। আপনারা জানতে চান কেন সরকারের মনোনীত ভিসি নিয়োগ করিনি? এটাই সত্যি যে কেউ ছিল দুর্নীতিপরায়ণ, কেউ ছাত্রীকে হেনস্থা করেছে, কেউ রাজনীতির খেলা খেলছিল। দুঃখজনক যে পাঁচজন ভিসিকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। তাঁরা আমাকে বলেছে যে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গুন্ডারা হুমকি দিয়েছে। শিক্ষা দফতরের সিনিয়র আমলারা তাঁদের ওপরে চাপ দিয়েছিল। তাঁরা ভয়ে পদত্যাগ করেছেন।'
ভিডিও বার্তার শেষ পর্যায়ে রাজ্যপাল কিছুটা সুর চড়িয়ে বলেন, 'আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আমি শপথ নিচ্ছি, আমি নেতাজি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দের নামে শপথ করে বলছি, আমি শেষ পর্যন্ত এই লড়াই লড়ব। বাংলার ভাই বোনেরা আমার সঙ্গে আছে। যারা চান দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। এই বাংলা আমার প্রাণের কর্মভূমি। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ওঠো,জাগো,লক্ষ্যে না পৌঁছনো পর্যন্ত থেমো না। তাই আসুন একসঙ্গে লড়াই করি , একসঙ্গে জিতি, আমাদের শিশুদের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য।'