বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে দাঁড়াবেন তমলুক লোকসভা আসন থেকে। এই জল্পনা শুরু হয়েছিল। আবার এও শোনা যাচ্ছিল, CPI(M)-এও যোগ দিতে পারেন তিনি। তবে সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় নিজেই। তমলুক আসন থেকে দাঁড়াবেন? বিজেপি-তে যোগ দেবেন না বামে? এই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিচারপতি।
সংবাদসংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'এখনও ঠিক করিনি কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেব। তবে আমি মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাই। বৃহত্তর পরিসরে কাজ করতে চাই। এখনও ঠিক করিনি কোন দলে যোগ দেব। আগে ইস্তফা দিই, তারপর ঠিক করব কোন দলে যাব।'
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। এটা আমার বিবেকের আহ্বান। বৃহত্তর মানুষ ও বৃহত্তর এলাকায় যাওয়া উচিত। আদালতে একজন বিচারপতি হিসেবে কাজ করেছি। সেখানে অনেক মানুষ এসেছে। তবে আমাদের দেশ বা বিশেষ করে রাজ্য়ে প্রচুর অসহায় মানুষ রয়েছেন। তাঁদের জন্য কাজ করতে চাই।'
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, 'যারা অসহায় মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই, তাঁদের সুযোগ দেয় রাজনীতি। গত কয়েক বছরে বিশাল দুর্নীতি ধরা পড়েছে। এই সরকারের শিক্ষা খাতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এখন কারাগারে বন্দী বা বিচারাধীন। তারপর আমি এখন শ্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিচ্ছি। প্রভিডেন্ট ফান্ড গ্র্যাচুইটির ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের দ্বারাও বড় ধরনের কেলেঙ্কারি রয়েছে। সেসব বিষয়ে কিছু আদেশও পাশ করা হয়েছে। কিন্তু শ্রম সংক্রান্ত বিষয়, শ্রম আইন প্রণয়ন করতে গিয়ে আমি যেটা ব্যর্থ হয়েছি। আমি অনুভব করেছি, এই দায়িত্বে আমার কাজ শেষ।'
রবিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি যা উত্তর দেব সব মঙ্গলবার। এখন কোনও উত্তর দেব না। আপনারা দয়া করে সব প্রশ্ন রাখুন। আমি সব উত্তর দেব। পদত্যাগের পর সব উত্তর দেব। দেশের প্রধান বিতারপতি ও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখব। আমি এখন কোনও প্রশ্নের উত্তর দেব না। আমি মিডিয়ার কাছে ঋণী। আমি মিডিয়াকে প্রণাম জানাতে চান। আমি মিডিয়ার কাছ থেকে কোনওকিছু লুকোতে চাই না। আমি পশ্চিমবঙ্গের ও সর্বভারতীয় মিডিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়েছেন। মাস্টারদার যে ফাঁসির অর্ডার হয়েছিল, তা দিয়েছিলেন এই কোর্টের এক ইংরেজ বিচারপতি। তবে মাস্টারদার ফাঁসির আগেই মৃত্যু হয়। যেটুকু জানা যায়। ক্ষুদিরামের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার হয়েছিল। টোকিও ট্রায়ালে রাধাবিনোদ পাল বলেছিলেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ফাঁসি দেওয়া যায় না। সেই কারণে,আজও রাধাবিনোদ পালের মূর্তি আছে। সেই জন্যই আমি মাস্টারদার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে যা বলার বলব।'