এই ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যায় কালীঘাটের কাকুর বহর বেশ ভালোই। অভিষেক ব্যানার্জির সংস্থার অন্যতম কর্তা কাকু। তাঁর ঠাটবাটও বেশ জমকালো। কাকুর শখেরও বলিহারি। বাড়িতে পুষছেন নিষিদ্ধ পাখি গ্রে প্যারোট। কোথা থেকে পেলেন তিনি এই পাখি? খোলা বাজারে এই পাখি তো বিক্রিই হয় না। আর ব্ল্যাক মার্কেটে এই পাখির দাম তিন হাজার ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। অর্থাৎ কাকুর বাড়িতে দুটি পাখির দাম প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। আচ্ছা কাকুর আয় কত টাকা? নিশ্চয়ই এই প্রশ্নটাই মাথায় ঘুরছে আপনাদের। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এর আগে বহু নেতা-মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন। বারংবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্তিনিকেতনের বাড়ি নিয়ে খোঁচা দিতে দেখা গিয়েছে বিরোধিদের। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে এল কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সম্পত্তি। একটা সময় অভিশেকের অফিশের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র বারে বারেই দাবি করে এসেছেন সৎ পথে চাকরি করে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে এই সম্পত্তি তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু কষ্ট করে উপার্জিত টাকা থেকে কি লাখ লাখ টাকার নিষিদ্ধ পাখিও কেনা যায়? মানে কতজন চাকুরিজীবী মানুষ এমনটা করতে পারেন? কথায় বলে শখের দাম লাখ টাকা। কিন্তু সেই লাখ আয়ের রাস্তাটাও থাকতে হবে। তাই না। তবে কাকুর সম্পত্তি নিয়ে যাই গুঞ্জন থাকুক না কেনো, তাঁর বাড়িতে থাকা এক জোড়া পাখি দেখে চোখ কপালে উঠেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? পাখিতো সকলেরই বাড়িতে থাকে। কিন্তু এই পাখি যে সে পাখি নয়। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়ির একতলাতে বসার ঘরে রাখা আছে এই এক জোড়া গ্রে প্যারট, অর্থাৎ ধূসর রং এর টিয়া পাখি। তথ্য বলছে এই গ্রে প্যারট পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই নিষিদ্ধ। 2016 সালে ইউনাইটেড নেশন বা রাষ্ট্রপুঞ্জ এই ধূসর টিয়া বিক্রয় এবং ক্রয়ের উপরে বিশ্বজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই থেকেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এই টিয়া পাখির লেনদেন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এই বিরল প্রজাতির পাখির উৎস আফ্রিকা মহাদেশে। মধ্য আফ্রিকা এবং পশ্চিম আফ্রিকায় একসময় এই ধূসর টিয়া অসংখ্য পরিমাণে থাকলেও, বর্তমানে মধ্য আফ্রিকায় এই পাখি একেবারেই বিরল। বর্তমানে শুধু পশ্চিম আফ্রিকাতেই অল্প পরিমাণে দেখা যায় এই পাখি। গোটা বিশ্বে বিরল প্রজাতির পাখির মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পাখি এই ধূসর টিয়া। অতি সহজেই মানুষের বলা যে কোনও ভাষা শিখে নিতে পারে এই বিরল পাখি। অল্প সময়ের মধ্যেই হুবহু নকলও করে ফেলতে পারে যেকোনো মানুষের কথাবার্তা। সেই কারণেই পাখি প্রেমীদের পছন্দের তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিয়েছে এই মিষ্টি পাখিটি। তবে এখন প্রশ্ন উঠছে রাষ্ট্রপুঞ্জ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যে পাখিটি নিষিদ্ধ করেছে সে পাখি কালীঘাটের কাকু পেলেন কোথায়? 'কালীঘাটের কাকু'-র নিষিদ্ধ পাখির, দাম কত জানেন? | Kalighat Kaku Arrested by ED