চা এবং কফি, এই দুই পানীয়ে চুমুক দেন না, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম। দিনের শুরুতে এক কাপ চা হোক কিংবা বিকেলের আড্ডা, আবার কাজের ফাঁকে মুডটাকে রিফ্রেশ করতে চা বা কফিতে চুমুক দেন অনেকেই। তবে জানেন তো, এভাবে ঘন ঘন চা-কফি খেলে শরীরের বারোটা বাজবে। বুঝতেও পারবেন না, অজান্তে শরীরে কী ক্ষতি হচ্ছে। এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর।
চা এবং কফি বেশি না-খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর। এই নিয়ে বিশেষ গাইডলাইন প্রকাশ করেছে তারা। যেখানে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, অধিক মাত্রায় চা-কফি খাওয়া এড়াতে হবে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, চা-কফিতে রয়েছে ক্যাফাইন। যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে শরীর একটি খাবারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।
আইসিএমআরের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে যে, একটি ১৫০ মিলি কাপ কফিতে ৮০-১২০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। ইনস্ট্যান্ট কফিতে এটা থাকে ৫০-৬৫ মিলিগ্রাম। চায়ে থাকে ৩০-৬৫ মিলিগ্রাম। আইসিএমআরের পরামর্শ, ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন খাওয়া মোটেই ঠিক নয়। শুধু তাই নয়, খাবার খাওয়ার এবং পরের ১ ঘণ্টা কখনওই চা-কফি খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এতে ট্যানিন থাকে, শরীরে আয়রনের শোষণকে কমিয়ে দিতে পারে। ফলে শরীরে আয়রণের ঘাটতি এবং অ্যানিমিয়ার সমস্যা তৈরি হতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত কফি খেলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যাও তৈরি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
আইসিএমআরের নির্দেশিকায় এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুধ ছাড়া চা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। দুধ ছাড়া চা খেলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। করোনারি আর্টারি ডিজিজ এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি কমে। তবে তা সত্ত্বেও দুধ ছাড়া চাও কম পরিমাণে খাওয়া উচিত।
আইসিএমআরের নির্দেশিকাগুলির সঙ্গে একমত দিল্লির সিকে বিড়লা হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের পরামর্শদাতা চিকিৎসক বিকাশ জিন্দাল। তিনিও জানিয়েছেন, খাওয়ার আগে এবং পরে চা বা কফি খেলে শরীরে আয়রণের ঘাটতি হতে পারে। হজমের সমস্যাও হতে পারে।