Mental Health: আমাদের আশেপাশের কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা অসুস্থ হতে শুরু করলে প্রথমে মানুষ তা জানতে পারে না। আসলে, অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা আছে এবং প্রত্যেকেরই উপসর্গ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রাথমিক লক্ষণ দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এই মানসিক সমস্যাও কার্যকরভাবে নির্ণয় করা যায়। সচেতনতা ও সঠিক তথ্যের অভাবে রোগী দীর্ঘদিন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থাকলে ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়তে থাকে।
উদ্বেগজনক সাইকোসিস:
সাইকোসিস একটি গুরুতর মানসিক সমস্যা। এটি এমন একটি সমস্যা যাতে বাস্তবের সঙ্গে রোগীর সম্পর্ক অনেকাংশে ভেঙে যায়। এর লক্ষণ হল এমন কিছু জিনিস রোগীর কাছে বাস্তব বলে মনে হয়, যা অন্যদের কাছে বা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই বাস্তব নয়। সাইকোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে সব সময় বা প্রায়ই ভ্রম কাজ করে। যেমন, আমার সম্পর্কে কেউ কানাঘুষো করছে বা আমার পিছনে বা কেউ কোনও শত্রুতা করছে। আমার ফোনে কেউ আড়ি পাতছে, কেউ আমার ক্ষতি করতে চাইছে বা কেউ আমার পিছু নিচ্ছে— এমন ধরনের চিন্তা ভাবনা যখন বাড়তে শুরু করে তখন তা সাইকোসিসের লক্ষণ হতে পারে।
কীভাবে সমস্যা বুঝতে পারবেন?
এখন প্রশ্ন হল একজন মানুষ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তা জানবে কী করে? লোকেরা সাধারণত প্রাথমিক লক্ষণগুলি বোঝে না বা উপেক্ষা করে না। দুর্ঘটনা ঘটলেই সমস্যা ধরা পড়ে। দ্বিতীয়ত, যে ব্যক্তি অসুস্থ সে বিষয়টি কাউকে জানায় না। যাইহোক, যখন একজন ব্যক্তি এইভাবে ভিতর থেকে অস্থির হয়, তখন এটি তার স্বভাবেও দেখা দিতে শুরু করে, যেমন রাগ, বিরক্তি, দুঃখ বা ভয় ইত্যাদি। তার আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে।
এই লক্ষণগুলি চিনুন এবং সতর্ক হয়ে যান:
• যখন একজন ব্যক্তি সব সময় ভয় পান, উদ্বেগ-আতঙ্কে থাকেন।
• যখন কোনও ব্যক্তি বাকি আশেপাশের লোকেদের থেকে দূরে থাকতে শুরু করেন বা নিজের সঙ্গেই কথা বলতে শুরু করেন।
• যখন কোনও ব্যক্তি প্রতিটি ছোটখাটো বিষয়ে রেগে যান, দুশ্চিন্তায় ঘুম আসে না বা হঠাৎ করে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়।
চিকিৎসা সমাধান হবে:
যদি কোনও ব্যক্তির দৈনন্দিন রুটিনে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তখনই তার স্বজনদের সতর্ক হয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে যথাযথ চিকিৎসা শুরু করতে হবে। মনরোগ বিশেষজ্ঞ রোগীর সঙ্গে কথা বললে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করবে। রোগের কারণও জানা যাবে এবং চিকিৎসা শুরু করলে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।
কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নত করা যায়:
প্রথমত, জীবনধারার ভারসাম্য বজায় রাখুন।
যোগব্যায়াম এবং ধ্যানকে রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন।
সব ধরনের নেশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
পরিবারের সঙ্গে বিবাদ থাকলে শান্তিপূর্ণভাবে তার সমাধান করার চেষ্টা করুন।
পরিবার বা সমাজের কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না।
মনের মধ্যে কোনও দীর্ঘমেয়াদী দ্বিধা বা বিভ্রান্তি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
দেশে প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ মানসিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা সাইকোথেরাপি থেকে উপকৃত হয়।