করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় ভ্যাকসিন। তবে কিছু মানুষের সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে ঘাবড়ে গিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। আসলে এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলিই বোঝায় যে এই ভ্যাকসিনটি আপনার দেহে কাজ করছে।
আমেরিকান নিউজ চ্যানেল এমএসএনবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অতিমারী বিশেষজ্ঞ এবং প্রধান চিকিৎসক উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফাউচি বলেছেন, হাতে দেওয়া ভ্যাকসিন পর্যায়ক্রমে সাড়া দেয়। কখনও কখনও দ্বিতীয় ডোজের পরে কিছুটা ব্যথা অনুভূত হয় এবং শীত অনুভূত হয়। এর অর্থ আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্রুত কাজ শুরু করেছে।
ভ্যাকসিন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে কোভিড-১৯ স্পাইক প্রোটিন সনাক্ত করতে এবং এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সহায়তা করে। অ্যান্টিবডিগুলি দ্বারা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে, এই প্রোটিনগুলি ভাইরাসটিকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে এবং রোগ ছড়াতে বাঁধা দেয়। কিছু মানুষের এই প্রক্রিয়াতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
সিডিসি-র মতে, করোনার ভ্যাকসিনের সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি হল, ইনজেকশনের জায়গাটি লাল হয়ে যাওয়া, ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া। সেই সঙ্গে ক্লান্তি, মাথা ব্যথা, পেশীতে ব্যথা, জ্বর, সর্দি এবং গা বমি ভাব। যদি কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনুভূত না হয়, এর অর্থ এই নয় যে ভ্যাকসিন কার্যকর হয়নি।
ফাউচি আরও বলেন যে, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পরে তিনি ক্লান্তি, শরীরে ব্যথা এবং ঠাণ্ডা ভাব অনুভব করেছিলেন। তবে তা একদিন পরেই চলে যায়। কিছু মানুষ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া পরে অনেকগুলি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনুভব করেন। এটি ঘটে কারণ প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাস সনাক্ত করতে পারে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে এটি তার উপর দ্রুত কাজ করে। এ কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং জ্বর, ক্লান্তি বা ব্যথা অনুভূত হয়।
যেখানে ভ্যাকসিন নেওয়া হয়েছে, সেই স্থানে লাল র্যাশ হয়ে যায় অনেক সময়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে আতঙ্কের মতো কোনও কারণ নেই। আসলে, এটি একটি ইঙ্গিত যে ভ্যাকসিনটি সঠিক ভাবে কাজ করছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে শরীর প্রতিরোধ ক্ষমতা পাচ্ছে। এর অর্থ হল প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি স্বীকৃতি দিচ্ছে যে আপনাকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল।
যদি আপনি ভ্যাকসিন গ্রহণের পরে জ্বর বা ক্লান্তির মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি অনুভব করে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে সিডিসি পরামর্শ দিচ্ছে, প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়ার পাশাপাশি বিশ্রাম নেওয়ার। ভ্যাকসিনের স্থানে ফোলা থাকলে, সেখানে একটি ঠান্ডা ব্যান্ডেজ লাগান।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। সঠিক ভাবে মাস্ক পরুন। যদি আপনার কোনও লক্ষণ দেখা যায়, জনসমাজে না যাওয়ার চেষ্টা করুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।