জীবনের অর্ধেকটা সময়ই যেখানে ঘুমিয়ে কেটে যায় আমাদের, সেখানে ঘুমের ধরন দেখে যে আমাদের স্বভাব অনেকটাই বোঝা যাবে, তাতে আর আশ্চর্য কীসের! এই যেমন ধরুন, যাঁরা চিত হয়ে ঘুমোন, তাঁরা নাকি বেশ দৃঢ় চরিত্রের মানুষ হন! আবার যাঁরা উপুড় হয়ে ঘুমোন, তাঁদের মানসিকতা বেশ খোলামেলা আর উদার প্রকৃতির হয়!
যৌনতা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি অস্বীকার করে ব্যতিক্রম পথে কেউ এগুতে পারে না। কিন্তু শারীরিক সম্পর্কে না জড়িয়েও ঘুমের ধরন দেখে বোঝা যায় কোন ব্যক্তির যৌন আকাঙ্ক্ষা কেমন। কারণ ঘুমের সময় মানুষ মুখোশের সম্পূর্ণ বাইরে থাকে।
মনোবিদেরা বলছেন দম্পতিদের শোওয়ার ধরন দেখে বিলক্ষণ তাঁদের দাম্পত্যের টাইপটাও বোঝা যায়! মোটামুটি আটরকম শোওয়ার ধরন রয়েছে, যার প্রতিটিই দাম্পত্যে আলাদা আলাদা ইঙ্গিত সূচিত করে।
স্পুনিং পজ়িশন বা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে শোয়া
অর্থাৎ দু’জনে একই দিকে মুখ করে ঘুমোন এবং যিনি পিছনে থাকেন তিনি অপরজনকে জড়িয়ে রাখেন। এই অবস্থানে ঘুমোনোর অর্থ হল একজন পার্টনার অপরজনকে সমস্ত ঝড়ঝাপটা থেকে সুরক্ষিত রাখতে চান। এঁদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসও থাকে যথেষ্ট! শোয়ার এই ধরন যেমন মিষ্টি, তেমনই রোমান্টিক। এ থেকে বোঝা যায় একজন অন্যজনের কতটা যত্ন নেয়। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই পজিশনে তারাই শোন, যৌনতা যাদের প্যাশন। এ ছাড়া দুজনের মধ্যে বিশ্বাস থাকলেও এই পজিশন নিজে থেকেই চলে আসে।
পেছন ফিরে শোয়া
সঙ্গীর দিকে পেছন ফিরে অনেকেই শোন। অনেক সময় দুজনের মধ্যে শারীরিক কোনো যোগাযোগ থাকে না। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি সম্পর্কের নিরাপত্তা বোঝায়। এ থেকে বোঝা যায় দু'জন দু'জনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সম্পর্ক নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো নিরাপত্তাহীনতা নেই।
শরীরী স্পর্শ রেখে পেছন ফিরে শোয়া
সঙ্গীর দিকে পেছন ফিরে শুয়ে আছেv, অথচ দুই শরীরের মধ্যে স্পর্শ আছে। এমন ঘটনা সচরাচর নতুন দম্পতির ক্ষেত্রে দেখা যায়। যারা বহুদিন ধরে সম্পর্কে রয়েছে বা বিয়ের অনেকদিন হয়ে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে এসব দেখা যায় না।
বিছানা জুড়ে শোয়া
কারও আবার ঘুমোনোর জন্য প্রচুর জায়গা দরকার হয়। এরা সম্পূর্ণ বিছানাজুড়ে শুয়ে থাকে। আর সঙ্গী থাকে একপাশে। এসব তখনই হয় যখন সম্পর্ক কোনো সমস্যার মধ্যে দিয়ে যায়। একজন এক্ষেত্রে নিজের ক্ষমতা জাহির করতে চায়। চরিত্রগত দিক থেকে তারা হন স্বার্থপর। আর এর ফল ভোগ করে অন্যজন।
জড়িয়ে শোয়া
দম্পতি বা প্রেমিক-প্রেমিকার একে অপরকে জড়িয়ে শোয়া এমন কিছু নতুন নয়। এই সময় একজনের পায়ের মাঝে থাকে আরেকজনের পা। বাহুবন্ধনও থাকে অন্যজনকে ঘিরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পজিশনের মানে দু'জন দুজনের ওপর যথেষ্ট নির্ভরশীল। তারা একে অপরের সান্নিধ্য পায় খুব কম। তাই যেটুকু পায়, সম্পূর্ণটা নিয়ে নিতে চায়।
বুকে মাথা রেখে শোয়া
সঙ্গীর বুকে মাথা রেখে শোয়ার মধ্যে রোমান্টিকতা আছে ভরপুর। কিন্তু এই ধরন এটাও বলে, দু'জন দু'জনের প্রতি যত্নশীল। এটি প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ। সাধারণত নতুন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে পুরোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে এসব হয় না, তা একেবারেই নয়।
পরস্পরকে মুখোমুখি জড়িয়ে ঘুমোনো কিন্তু তারপর আলাদা হয়ে যাওয়া
এই অবস্থানে যাঁরা ঘুমোন তাঁরা ঘুমের প্রথমদিকটায় পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে থাকলেও মিনিট দশেকের মধ্যে আলাদা হয়ে গিয়ে যে যার মতো ঘুমিয়ে থাকেন। পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা আর ব্যক্তিস্বাধীনতা, দুটো দিকই বজায় রাখার ইঙ্গিতবাহী এই অবস্থানটি।
সারা রাত মুখোমুখি জড়িয়ে ঘুমোনো
এই অবস্থানটি শুনতে খুবই রোমান্টিক মনে হলেও সম্পর্কের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব একটা ভালো নয়! তাতে একদিকে যেমন ব্যক্তিস্বাধীনতার অভাব বোঝায়, অন্যদিকে সম্পর্কে একটা নিরাপত্তার অভাবও সূচিত করে।