সাধারণ ভাবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দেখা যায় বিয়ের পরই একটি যুগল তাদের সন্তান নেয়। কিন্তু, সম্প্রতি জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বর্তমান প্রজন্মের বহু শিক্ষিত মহিলাই এখন তাঁদের প্রথম সন্তান বিয়ের আগেই ধারন করতে চাইছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, গত শতাব্দীর ন'য়ের দশকে এই প্রবণতা দেখা যেত না। তবে, বিশ্বের বেশিরবাভ দেশেই এখন এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যদিও, সেখানে এই প্রবণতাকে মোটেই ভাল বলছেন না বিজ্ঞানীরা। (ফোটো- গেটি)
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বহু শিক্ষিত যুবতী বিয়ের অনেকটা আগেই নিজের প্রথম সন্তান নিতে চাইছেন। তার কিছুদিন পর প্রয়োজনে দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। তারপর সংসার করার জন্য বিয়ে। তরুণ সমাজের এই বিচিত্র চিন্তা-ভাবনার জন্য সমাজ বিজ্ঞানীরা রীতিমতো চিন্তিত। (ফোটো- গেটি)
বলা হচ্ছে, বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে বর্তমানে কলেজ পড়ুয়াদের ১৮ থেকে ২৭ শতাংশ তরুণীদের মধ্যে বিয়ের অনেকটা আগেই সন্তান নিয়ে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তাঁদের অনেকেরই মত, বিয়ে করে সন্তান ধারন করার পর দেখা যাচ্ছে অনেক সময়ই স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হচ্ছে। তাই সেই সমস্যা এড়াতে আগেই সন্তান ধারন করে পার্টনারের সঙ্গে লিভ-ইনে যাচ্ছেন তাঁরা। তারপর পরিবারের জন্য বিয়ে করছেন। কিন্তু, এই প্রবণতাকে মটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না সমাজ বিজ্ঞানীরা। (ফোটো- গেটি)
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক তিনটি আলাদা আলাদা স্টাডিতে দেখতে পেয়েছেন, তরুণীরা এখন প্রায় সব স্তরেই উন্নতি করেছে। কিন্তু তারপরও, ক্রমেই বিয়ের আগে সন্তান প্রসবের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। (ফোটো- গেটি)
বিয়ের পর সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত দেখা গেছে সেই মহিলাদেরই যারা হয় হাইস্কুল পাশ করেননি অথবা, সেই সমতুল্য ডিপ্লোমা অর্জন করেছেন। অন্যদিকে, বিয়ের আগে সন্তান ধারনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ মহিলারাই উচ্চ-শিক্ষিত। (ফোটো- গেটি)
১৯৯৬ সালে দেখা যেত কলেজ থেকে ডিগ্রি অর্জিত করে বিয়ের আগেই সন্তান ধারন করেছেন এমন মহিলার সংখ্যা মাত্র ৪ শতাংশ। অত্যদিকে, ২০ বছর পর এখন দেখা যাচ্ছে, সেই সংখ্যা ৬ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪.৫ শতাংশে। ৩০ বছরের মধ্যেই তাঁরা বিয়ের আগে প্রথম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। এরপর দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের ঠিক আগে বা ঠিক পড়েই তাঁরা বিয়ে করছেন। (ফোটো- গেটি)
গবেষণায় দেখা গেছে, এই মানসিকতা নিয়ে চলা মহিলাদের অধিকাংশই আবার প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে একই পার্টনারকে চাইছেন। ফলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা লিভ-ইনে পরিবর্তিত হচ্ছে। পরে, অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই বিয়ে হচ্ছে অন্য কোনও ব্যক্তির সঙ্গে। (ফোটো- গেটি)
মার্কিন যুক্তকরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেখানকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা বিয়ের অর্থই বদলে দিয়েছেন। তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিয়েকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তার থেকে বেশি একসঙ্গে থাকাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আর তা করতে গিয়ে বিয়ের বদলে লিভ-ইন অনেক বেশি ঝুঁকিহীন বলেই মনে করছেন এই প্রজন্ম। (ফোটো- গেটি)
স্টাডিতে দেখা গেছে, একাধিক দেশে আর্থিক সমস্যার কারনেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বর্তমান প্রজন্ম। কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে কলেজে পড়ার জন্য একটা বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ হচ্ছে। তারপর সেখান থেকে পাশ করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা এবং টাকা জোগাড়ের জন্য একটা লড়াই। সব মিলিয়ে বিয়ের জন্য তৈরি হতে অনেকটা সময় কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। অন্যদিকে, সিঙ্গল পেরেন্টের ক্ষেত্রে সেই দায় এবং দায়িত্ব কোনওটাই পালন করতে হচ্ছে না তাঁদের। তাই তাঁরা লিভ-ইনকেই বেছে নিয়েছেন। (ফোটো- গেটি)