রাত পোহালেই গণেশ চতুর্থী। হিন্দুদের কাছে এই পুজোর মাহাত্ম্য অপরিসীম। মূলত মহারাষ্ট্র সহ পশ্চিম ভারতে ধুমধাম করে এই উৎসব পালিত হলেও আজকাল বাঙালিরাও ঘরে ঘরে পালন করছেন গণেশ চতুর্থী। গত কয়েক বছর ধরে গণেশ চতুর্থী নিষ্ঠা ভরে সমস্ত আচার মেনে পালন করছেন বাঙালি গৃহিনীরা। বানাচ্ছেন গণপতি বাপ্পার প্রিয় মোদকও। থালায় নৈবদ্য স্বরূপ মোদক সাজিয়ে নিবেদন করা হয় গণেশকে। কেউ হাত বানান আবার কেউ বা রেডিমেড মোদক কিনেই প্রসাদ দিচ্ছেন বাপ্পাকে।
বাঙালিরা ঘরে ঘরে এই মুহূর্তে শেষ পর্বের তোড়জোড় চালাচ্ছেন। দশকর্মার বাজার করা হয়নি অনেকেরই। কেনা হয়নি ফুল, ফলও। তবে গণেশ পুজো হবে আর বাড়িতে মোদক তৈরি হবে না, তা হয় নাকি! ফলে মোদক তৈরির সরঞ্জাম কিনতেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সকলেই। বাড়িতে আসা অতিথিদের হাতে তৈরি মোদক খাওয়াতে উৎসুক গণেশ ভক্তরা। কিন্তু সেখানেই বিপদ। অনেকেই আবার স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় কড়া পাঁকের মোদক খেতে গিয়ে গোঁত্তা খান। তবে সেখানেও রয়েছে সলিউশন। বাড়িতে অনায়াসেই বানানো যায় চিনি-ময়দা ছাড়া গ্লুটেন ফ্রি মোদক।
মোদকপ্রিয় গণপতি বাপ্পার নৈবেদ্যের থালায় এবার রাখতে পারেন অভিনব এই গ্লুটেন ফ্রি মোদক। কীভাবে বানাবেন সেটি? আদৌ বাজারে মিলবে সমস্ত সরঞ্জাম? বিস্তারিত বর্ণনা রইল...
বাপ্পার প্রিয় এই মোদক তৈরি করতে ময়দার বদলে ব্যবহার করুন সুজি কিংবা আটা। চিনির বদলে ব্যবহার করুন গুড়। আর কী কী উপকরণ লাগবে মোদক বানাতে?
ঘি, নারকেল কুড়ো, কাজু, পেস্তা, কিশমিশ, গুঁড়ো দুধ। এর রন্ধনপ্রণালীও খুব সহজ। বাপ্পার পুজোতে বসার আগেই সেরে নিন মোদক বানানোর পর্ব।
প্রথমে একটি ননস্টিক পাত্রে ২ বড় চামচ ঘি ঢালতে হবে। সেটিকে হাল্কা গরম করে আটা কিংবা সুজি মিশিয়ে নিন। কম আঁচে প্রায় ৭ থেকে ৮ মিনিট এটিকে নাড়ান।
নাড়তে নাড়তেই বুঝবেন, সুজি কিংবা আটার রং বদলে যাচ্ছে। সঙ্গে বেরোচ্ছে সুগন্ধ। এরপর উপর থেকে ছড়িয়ে দিন নারকেল কুড়ো। এই মিশ্রণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন ড্রাই ফ্রুটস। তালিকায় রাখতে পারেন পেস্তা, কাজু, কিশমিশ।
ভাল করে নাড়াতে হবে মিশ্রণটি। ২-৩ মিনিট পর্যন্ত আঁচ কমিয়ে রাখতে হবে। তারপর একটু জমাট বাঁধতে থাকলেই তাতে মেশাতে হবে গুড়। মিশ্রণের সঙ্গে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। আলাদা একটি পাত্রে গুড়ো দুধ জলে গুলে নিন। তারপর মিশ্রণের মধ্যে ধীরে ধীরে মিশিয়ে নিন সেটি। এরপর ভাল করে নাড়াচাড়া করুন।
মিশ্রণ বা মণ্ড থকথকে হয়ে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। মোদক প্রায় তৈরি, এবার সেটিকে আকার দেওয়ার পালা। যদি বাড়িতে মোদক তৈরি করার ছাঁচ থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। নচেৎ হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিজের পছন্দমতো আকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করুন।
চিনি ও ময়দা ছাড়া এই গ্লুটেন ফ্রি মোদক তৈরি হয়ে গেলে, উপর থেকে ছড়িয়ে দিতে পারেন কেশর। বাড়িতে গণেশ পুজোয় আসা অতিথিরা স্বাস্থ্য সচেতন হলে এই মোদক খেয়ে তারিফ করতে বাধ্য হবেন।
আবার বাড়িতে এই মোদক তৈরি করার সময় না থাকলে দোকান থেকেও কিনে আনতে পারেন গ্লুটেন ফ্রি মোদক। অনেক শপিং মল, জনপ্রিয় মিষ্টির দোকানে মিলছে প্যাকেট করা গ্লুটেন ফ্রি মোদক। কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে মোদকগুলি। আবার অনলাইনেও অর্ডার করা যেতে পারে এই চিনি-ময়দা ছাড়া মোদক।