ফলের রাজা আম। গ্রীষ্মের মরসুমে প্রায় সকলেই আম খেতে পছন্দ করেন। আমে থাকে ফাইবার, বেশকিছু ভিটামিন ও মিনারেল। তাছাড়াও আমে বেশকিছু অ্যান্টিঅক্সাইডও পাওয়া। এর ফলে শরীরে বেশকিছু উপকারও হয়। তবে সাম্প্রতিককালে বাজারে এমন কিছু আম পাওয়া যাচ্ছে যাতে থাকে বিষাক্ত রাসায়নিক, যা শরীরে যাওয়া রীতিমতো ক্ষতিকারক।
কিছু ফলকে নকলভাবে পাকান হয়, যাতে সেগুলি তাজা দেখায়। সেক্ষেত্রে যদি আপনি এমন কোনও আম খান যাতে রস নেই তাহলে হতে পারে সেটিকে নকলভাবে পাকান হয়েছে। মূলত আমের চাহিদা মেটাতেই সারা দেশে এইরকম কৃত্রিম উপায়ে আম পাকানর প্রক্রিয়া দ্রুত বাড়ছে।
রাসায়নিক দিয়ে কীভাবে পাকান হয় আম? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এতে বিশেষভাবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করা হয়। ক্যালসিয়াম কার্বাইডের প্যাকেট আমের সঙ্গে রাখা হয়। যখন এই রাসায়নিকটি আর্দ্রতার সংস্পর্শে আসে তখন অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এর কাজ ইথিলিনের মতোই, যা ফল পাকার প্রক্রিয়াতে প্রাকৃতিকভাবে ব্যবহৃত হয়। শুধু আমই নয়, অন্যান্য ফলও একইভাবে কৃত্রিম উপায়ে পাকান হয়।
কৃত্রিমভাবে পাকানর জন্য ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার FSSAI দ্বারা নিষিদ্ধ। কারণ ক্যালসিয়াম কার্বাইড স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর ফলে মাথা ঘোরা, নিদ্রাহীনতা, মানসিক ভ্রম ও স্মৃতিশক্তি লোপের মতো লক্ষণ দেখা যায়। ক্যালসিয়াম কার্বাইড স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। আর্সেনিক এবং ফসফরাস হাইড্রাইড হরমোনেরও ক্ষতি করে।
এছাড়া ক্যালসিয়াম কার্বাইডের জন্য ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট কমে যায়। ফল দ্রুত নরম হয়ে পচে যায়। ফল যতটা কাঁচা, তার ওপরে নির্ভর করে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহারের পরিমান।
আপনি কীভাবে বুঝবেন? আপনি যে আম খাচ্ছেন সেটা নকল উপায়ে পাকান হয়েছে কি না তা খুব সহজেই বোঝা যায়। আমগুলিকে জলে রাখুন। যদি ডুবে যায় তাহলে সেটি প্রাকৃতিক উপায়ে পাকা আম। আর যদি ভেসে থাকে, তাহলে বুঝবেন কৃত্রিম উপায়ে পাকান হয়েছে। তাছাড়া কৃত্রিম পদ্ধতিতে পাকান আমে রস খুবই কম, প্রায় থাকে না বললেই চলে।
তাছাড়া কৃত্রিমভাবে পাকান আম সবুজ দাগযুক্ত হয়। যা হলুদ রঙের আমের থেকে আলাদা। আর সেগুলি খেলে মুখের মধ্যে হালকা জ্বলন, পেটে ব্যথা বা ডায়রিয়ারও আশঙ্কা থাকে।
তাছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে পাকা আমে প্রচুর পরিমান রস থাকে। কিন্তু কৃত্রিম আমে তা থাকে না। এই সমস্ত উপায়ে আপনি প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উপায়ে পাকান আমের পার্থক্য বুঝতে পারবেন।