মাছ ছাড়া বাঙালির চলে না। তা সেই শীত হোক কিংবা গ্রীষ্ম অথবা বর্ষা। মাছ ভাত খেলে তবেই না মনে হয় যে পেট ভরল। তাই তো বলা হয় মাছে-ভাতে বাঙালি। ঝোলে ঝালে, অম্বলে, ভাজায় যাতেই হোক, ঝাল হোক পাতে মাছ তো চাই। তবে গরমে সব মাছ না খাওয়াই ভাল। বিশেষ করে বড় মাছ ঝালে বা ঝোলে।
এর চেয়ে অনেক বেশি উপকার লুকিয়ে রয়েছে ছোট মাছে। এই সময় পাতলা ছোট মাছের ঝোল খেতে পারেন। কিছু মাছ রয়েছে যেগুলি গরমে দিব্যি খেতে পারেন। তাতে বাড়তি সমস্য়া তৈরি করবে না। পেট রাখবে ঠান্ডা।
ছোট মাছে কাঁটা বেশি বলে অনেকে পছন্দ করেন না। তবে বিশেষজ্ঞরা এই ছোট মাছই খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মৌরলা, ফলুই, কাচকি, ট্যাংরা, পুঁটি, সরপুঁটি, কাজলি, চাপিলা, পাবদা, বোরোলি এসবই হল ছোট মাছ। বাংলার নদী, নালা-খালেই এই সব মাছের বাস।
ছোট মাছ দামে যেমন সস্তা তেমনই পুষ্টিতে ভরপুর। তাই রোজকার পাতে এই সব মাছই রাখার চেষ্টা করুন। সপ্তাহে-দুসপ্তাহে রুই-কাতল ট্রাই করতে পারেন। তবে গরমের কটা দিন সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ বাদ দেওয়াই ভাল।
ফলুই মাছ স্বাদে তুখোড়। তবে কাঁটায় ভয়ে অনেকেই খেতে চান না। এই মাছের ঝোল খুবই সুস্বাদু। ১০০ গ্রাম মাছের মধ্যে ২০.৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়াও থাকে ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস এবং ভিটামিন এ। যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে।
বাজারে ঢেলে বিক্রি হয় কাচকি মাছ। ছোট এই মাছের চচ্চড়ি, ভাজা দুই ভাল লাগে। এই মাছ খুব ভাল করে যা ধুয়ে নিতে হয়। কাটার কোনও ঝামেলা নেই। ১০০ গ্রাম কাচকি মাছের মধ্যে প্রোটিন থাকে ১২.৭ গ্রাম। ৩.৭ গ্রাম ফ্যাট আর ৪৭৬ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। শরীরে শক্তির যোগান দিতে এই মাছের জুড়ি মেলা ভার।
মৌরলা মাছও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল। তবে এক্ষেত্রে নদীর পরিবর্তে পুকুরের মৌরলা হলে আরও ভাল। এতে ক্যালশিয়াম থাকে ঠাসা। থাকে প্রোটিনও। এছাড়া চাপিলা, উত্তরবঙ্গের বোরোলি, পাবদাও কম নয়।
ট্যাংলার পাতলা ঝোল খেতে কার না ভাল লাগে। তবে ডিম ভরা নয়, ছোট ট্যাংরাই কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য সবচাইতে ভাল। ট্যাংরা মাছ রক্তের স্বল্পতা জনিত রোগ বা দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। শরীরে আনে বল। ১০০ গ্রাম ট্যাংরা মাছে থাকে ১০৬ ক্যালোরির শক্তি। ১৯.২ গ্রাম থাকে প্রোটিন, চর্বি থাকে ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম থাকে ২৭০ মিলিগ্রাম।