বৃষ্টির মরশুম ঢুকে গিয়েছে। চারিদিকে একটা স্যাঁতস্যাঁতে ভাব। সঙ্গে বেশ কিছু রোগজীবাণু সঙ্গে করে নিয়ে আসছে, টাটকা বাতাসের মতো বৃষ্টি। এই সময়ে সর্দি-কাশি, ফ্লু খুব দ্রুত আমাদের শরীরকে বাসা বানিয়ে ফেলে। ফলে সুস্থ থাকতে হলে এই সময়ে কিছু জিনিস খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিতে হবে। এগুলো এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল। আপনারা জেনে নিন, বর্ষার বা বৃষ্টির মরশুমে কোন কোন খাবার আমরা খাব না।
পালং বা বথুয়া
বর্ষার সময় পালং শাক, বেগুন, ওলকপি, ফুলকপি, বাঁধাকপি কোনও কিছুই আমরা এই মুহূর্তে খাব না। এই সময় এগুলো বাদ দিয়ে চললেই ভালো। এর পেছনে কারণ হলো বৈজ্ঞানিক। বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন, যে বর্ষার সময় ব্যাকটেরিয়া এবং এই সমস্ত শাক পাতায় ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে এবং স্থায়ী বাসা বানায়। এই শাকপাতা বর্ষার সময় নিয়ে আসে সেই ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু, যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। ফলে এগুলো এড়িয়ে চলাই উচিত। পাতা যুক্ত সবজি দিয়ে কীটপতঙ্গ খুব দ্রুত শরীরে প্রবেশ করে।
মাশরুম
জানিয়ে দেওয়া যাক, বর্ষার সময় মাশরুম নৈব নৈব চ। এমনিতেই স্যাঁতস্যাঁতে, আনহাইজেনিক জায়গায় জন্মায়। তাই মাশরুম এই সময় খেলে মাশরুমের মধ্য দিয়ে রোগজীবাণু ও ফাঙ্গাস আমাদের শরীরে চলে আসতে পারে। যা ইনফেকশন তৈরি করতে পারে।
দই
বর্ষার সময় দই কিন্তু একেবারেই খাওয়া চলবে না। যতই গরমে আপনি শরীর ঠান্ডা রাখতে দই খান না কেন, বর্ষার সময় কিন্তু এটি চলবে না। কারণ দইয়ের মধ্যে বর্ষার সময় বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। যা দই খেলে আপনার অন্ত্রে বাসা বাঁধতে পারে। সেই সঙ্গে ঠান্ডা লাগার যাদের ধাত রয়েছে, তাদের তো একেবারেই বর্জনীয় বর্ষাকালে দই।
মাছ
বর্ষার সময় মাছ অথবা অন্য সামুদ্রিক জীব এর জন্য প্রজননের সময়। তাই এই কারণে এই সময় মাছ খাওয়া ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া বৃষ্টির মরশুমে জল দূষিত হয়ে যায়। যা মাছেদের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেই মাছ খেলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি।
রেড মিট
বর্ষার মরশুমে আমাদের পাচন ক্রিয়া কমজোর হয়ে পড়ে। এ কারণে খুব বেশি ভারী ভোজন না করাই উচিত এই সময়। পাচনতন্ত্র কে যতটা বিশ্রাম দেওয়া সম্ভব ততটা বিশ্রাম দিতে হবে। রেডমিট এর মতো খাবার, যেগুলি হজম হতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগে, সেগুলি এই মুহূর্তে এড়িয়ে চলা ভাল।
স্যালাড
আপনি শুনে অবাক হবেন যে এই বর্ষার সময় স্যালাড খাওয়া কিন্তু বারণ। সারা বছর আপনাকে যে স্যালাড শরীরে পুষ্টি যোগায় সেই স্যালাডই বর্ষাকালে বিষ হয়ে যেতে পারে। আসলে স্যালাড শুধু নয়, বর্ষার সময়ে কোনও জিনিসই কাঁচা খাওয়া উচিত নয়। এ কারণে কাটা সবজির মধ্যে বর্ষার মরশুমে বাতাসে জীবাণু ঘুরে বেড়ায়। সেগুলি আক্রমণ করে। তা ছাড়া ফল বা সবজি কেটে রাখলে তাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। খুব দ্রুত সেগুলিকে স্বাভাবিকভাবে আমাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডিপ ফ্রাই এবং ভুনা
কোন জিনিস বৃষ্টির মরশুমে আমাদের কোনও ডিপ ফ্রাই, ভাজা খাওয়া থেকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এই ধরনের ভোজন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে পিত্ত বাড়াতে শুরু করে। অন্যদিকে এই মরশুমে লোকেদের ডাইজেশন প্রক্রিয়া অনেকটাই দুর্বল হয়ে থাকে সেই কারণে এই ভাজাভুজি যতটা এড়িয়ে চলা যায় ততটা শরীরের পক্ষে ভালো
স্ট্রিটফুড
বর্ষার সময় স্ট্রিটফুড এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ সব জায়গায় আঢাকা খাবার বর্ষায় রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। ডেঙ্গু এবং ভাইরাল যে কোনও রোগ এই সময়ে আক্রমণ করতে পারে। টাইফয়েড, কলেরার রোগ জীবাণু বিভিন্ন জায়গায় আঢাকা খাবারে, জলে ছড়িয়ে থাকে, যা আমাদের রোগাক্রান্ত করে ফেলতে পারে। তাই এই খাবারগুলি আপাতত বর্জন করাই ভালো।