আজকাল কোমরের ব্যথা ও পিঠের ব্যথায় অনেকেই ভোগেন। ভারতে পিঠের নিচের ব্যথার ঘটনা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়েছে। কারণ ভারতের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ জীবনে কোনও না কোনও সময়ে পিঠের নিচের দিকের ব্যথায় ভোগেন। ঘর পরিষ্কার বা কোনও শারীরিক কার্যকলাপ করার সময় পিঠে ব্যথা লাগতে পারে। অথবা আর্থ্রাইটিস এবং অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় এই ব্যথা অসহ্য হয়ে ওঠে। দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যথার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার দেওয়া হয়। তবে কখনও কখনও ঘরে বসেও হালকা পিঠের ব্যথা নিরাময় করা যেতে পারে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পিঠের ব্যথার চিকিৎসার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার সবচেয়ে ভাল কাজ করে। এতে, একদিকে যেমন ওষুধ খাওয়া এড়ানো যায়, তেমনই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার খরচও বাঁচানো যায়। তাই কারও যদি কোমর ব্যথা থাকে, তবে নিম্নলিখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অবলম্বন করতে পারেন।
১. সচল থাকা (Keep Moving)
পিঠের ব্যথায় রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভুল ধারনা হল, তাঁরা হয়ত স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন না। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনায় হাঁটাচলা স্বাভাবিক রাখলে তা পিঠের ব্যথা সাহায্য করবে। যাঁদের পিঠে ব্যথা আছে তাঁদের প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত। এছাড়া শরীর সক্রিয় না থাকলে মেরুদণ্ড এবং পিঠের চারপাশের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। যার জেরে ব্যথার সৃষ্টি হয়। তাই কোমরে ব্যথা থাকলেও হাঁটাচলা করা থাকুন।
২. স্ট্রেচিং এবং শক্তি ব্যায়াম (Stretching and strength exercises)
পেটের মূল পেশীগুলি পিঠকে সাপোর্ট করতে সহায়তা করে। শক্তি এবং নমনীয়তা উভয়ই ব্যথা উপশম ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই স্ট্রেচিং এবং পিঠকে শক্তিশালী করার ব্যায়াম করতে ভুলবেন না।
৩. সঠিক ভঙ্গি রাখুন (Keep the right posture)
যদি পিঠে ব্যথা থাকে, তাহলে মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে আপনি টেপ, স্ট্র্যাপ বা স্ট্রেচি ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন। কাঁধ নাড়াবেন না বা চিবুক সামনের দিকে ঝোঁকাবেন না। আপনি যদি কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে কাজ করেন তবে আপনার হাত টেবিল বা ডেস্কে সমতল রাখুন এবং আপনার চোখ পর্দার উপরে রাখুন। মাথাও ঝোঁকাবেন না।
৪. ওজন বজায় রাখুন (Maintain weight)
যদি কারও ওজন বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই তার পিঠে ব্যথা হবে। পিঠের ব্যথা এড়াতে, ওজন হ্রাস করুন যাতে নীচের পিঠ থেকে চাপ কমানো যায়। যদি আপনার ওজন কমাতে সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি একজন ফিটনেস প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারেন।
৫. ধূমপান ত্যাগ করুন (Quit smoking)
গবেষণা দেখা গিয়েছে, যিনি ধূমপান করেন, তাঁর মেরুদণ্ডের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা ৪ গুণ বেশি। সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের নিকোটিন মেরুদণ্ডের হাড়কে দুর্বল করে দিতে পারে।
৬. আইস প্যাক চেষ্টা করুন (Try Ice pack)
পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আইস কম্প্রেস একটি খুব ভাল উপায় হতে পারে। যদি পিঠে ফোলা বা ব্যথা থাকে তবে বরফ সবচেয়ে বেশি উপশম দেয়। আর যদি শক্ত পেশী শিথিল করার চেষ্টা করেন তাহলে হিটিং প্যাড ব্যবহার করা ভাল।
আরও পড়ুন - নয়া সংসদ ভবনের অশোক স্তম্ভে আপত্তি TMC-র, পরিবর্তনের দাবি