হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভগবদ গীতা। যা মানুষকে সঠিক জীবনযাপনের পথ দেখায়। গীতা জীবনে ধর্ম, কর্ম এবং প্রেমের পাঠ শেখায়। শ্রীমদ্ভগবদ গীতায় মানুষের খুশি থাকার গোপন তথ্য রয়েছে। মানবজীবনকে সঠিক দিশায় নিয়ে যায় গীতা। গীতা একটি সম্পূর্ণ জীবন দর্শন। যে ব্যক্তি তা অনুসরণ করেন তিনি ভয়-কষ্ট থেকে দূরে থাকেন। তাঁর মস্তিষ্ক থাকে সর্বোত্তম সুখী অবস্থায়। তেমনই গীতার জ্ঞান নিয়ে আপনি হতে পারেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
মহাভারতের যুদ্ধের সময় অর্জুন দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছিলেন। ধনুক হাতে যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়াতে পারছিলেন না। কারণ তাঁর বিপরীতে ছিলেন স্বজনরা। সেই সময় অর্জুনকে পথ দেখিয়েছিলেন তাঁর সারথী কৃষ্ণ। সেই পথ দেখানোর সময় অর্জুনকে কৃষ্ণ কর্মযোগের পাঠ দিয়েছিলেন। সেই পাঠই হল গীতা। গীতার পাঠ পাওয়ার পর অর্জুনের দ্বিধা কেটে যায়। তার পর যুদ্ধে অবতীর্ণ হন তিনি। অর্জুনকে দুশ্চিন্তা ও দ্বিধামুক্ত করেছিলেন কৃষ্ণ। বর্তমান জীবনযাত্রায় প্রত্যেকের কুরক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছে। সবসময় লড়াই চালাতে হচ্ছে। এই সময় গীতা তাই হতে পারে সাফল্য ও আনন্দের চাবিকাঠি। গীতায় শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন কোন ধরনের মানুষ পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী থাকতে পারেন-
আশা করা অন্যায়- শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ তাঁরাই যাঁরা বুঝতে পেরেছেন যে অন্যের কাছ থেকে কিছু আশা করা বৃথা। এই প্রত্যাশাই ব্যক্তির দুঃখের কারণ।
ফলের চিন্তা নয়-শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন, যে কোনও ব্যক্তি তাঁর ইচ্ছামতো মনকে চালাতে রে যদি সে ক্রমাগত তাঁর কাঙ্ক্ষিত জিনিস সম্পর্কে চিন্তা না করে। ফলের চিন্তা ছেড়ে নিজের কাজের উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করলে তিনি সাফল্য পাবেন।
নিজেই নিজের চালিকাশক্তি- শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা অনুসারে,জয়ের জন্য নিজেকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন যে অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস হল ব্যক্তির নিজের চিন্তা। তাই নিজেকে জয় করতে হবে। ভয় ও চিন্তামুক্ত হয়ে নামতে হবে লড়াইয়ের ময়দানে।
নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ- রাগই বুদ্ধিভ্রষ্টের কারণ। তাই রাগ সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। ভুল করলে নত হওয়া দরকার। পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ঠান্ডা মাথায়। রাগ আর অহংকার এই দুটো জিনিসই মানুষকে ধ্বংস করে।
ধৈর্যচ্যুতি নয়- কখনও ধৈর্য হারালে চলবে না। বরং নিজের উপর বিশ্বাস রেখে চলতে হবে। কর্মকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কাজ না করে শুধু অদৃষ্টের ভরসায় বসে থাকলে সাফল্য আসবে না। আর সাফল্য না এলে কোনও সমস্যা নেই। কর্মযোগী এগিয়ে চলেন। তিনি পিছন ফিরে দেখেন না।