সুস্থ জীবন পেতে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। খাবার সঠিকভাবে হজমের জন্য খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক কার্যকলাপ যতটা জরুরি, ঠিক ততটাই নজর দেওয়া দরকার লাইফস্টাইলের কিছু অভ্যাসের দিকে। এই প্রসঙ্গে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীক্ষা ভাবসার জানাচ্ছেন, প্রতিদিনের কিছু সাধারণ ভুল আমাদের হজম প্রক্রিয়ায় খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। এই ভুলগুলো শুধরে নিলে ওষুধের পেছনে টাকা খরচ না করে হজমশক্তির উন্নতি ঘটানো যায়।
খাওয়ার পর স্নান - আয়ুর্বেদ অনুসারে মানুষের প্রতিটি কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলি অসময়ে করলে শরীরের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার খাওয়ার পর প্রায় দুই ঘণ্টা স্নান এড়িয়ে চলা উচিত। আসলে শরীরে উপস্থিত ফায়ার এলিমেন্ট খাবার হজম করতে সাহায্য করে। খাওয়ার পর এই উপাদানগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং হজম প্রক্রিয়ার জন্য রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু খাওয়ার পর স্নান করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং হজম প্রক্রিয়াও মন্থর হয়ে পড়ে।
খাওয়ার পরেই হাঁটাহাঁটি - দ্রুত হাঁটা শরীরের জন্য খুব ভাল ব্যায়াম। তবে খাওয়ার ঠিক পরপরই হাঁটা হজমের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। ডক্টর ভাবসার বলছেন, 'অত্যধিক দীর্ঘ হাঁটা, সাঁতার কাটা বা ব্যায়াম, হজমের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এতে পেট ফুলে যাওয়া, পুষ্টি শোষণ হ্রাস এবং খাওয়ার পরে অস্বস্তিও হতে পারে।'
দুপুর ২টোর পর লাঞ্চ - এটা জানেন কি যে খাবার খাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে? আয়ুর্বেদ দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত যে কোনও সময়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়। অর্থাৎ সূর্য যখন মাথার ওপরে থাকে। এই সময় খাবার খেলে সহজে হজম হয়। সেই কারণেই মধ্যাহ্নভোজকে আয়ুর্বেদে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বলা হয়েছে।
রাতে দই - দই খেলে আমাদের শরীরের অনেক উপকার হয়, কিন্তু তা কখনওই রাতে খাওয়া উচিত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দইয়ের টক-মিষ্টি স্বাদ শরীরে বায়ু ও পিত্ত দোষ বাড়ায়। তাছাড়া রাতে কফ স্বাভাবিকভাবেই শরীরে প্রাধান্য পায় এবং সেই সময়ে দই খেলে তা অনেকটাই বেড়ে যায়। এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও তৈরি হয়।
খাওয়ার পরেই শুয়ে পড়া - রাতে ডিনারের পরপরই শুয়ে পড়ার ভুল করা উচিত নয়। আয়ুর্বেদ অনুসারে, রাতে খাওয়া এবং ঘুমানোর মধ্যে প্রায় তিন ঘন্টার ব্যবধান থাকা উচিত।
আরও পড়ুন - 'ফুটছে' দক্ষিণবঙ্গ, কতদিন চলবে দহন?