অনেককেই দেখা যায় কারণে-অকারণে ঠোঁট কামড়াতে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক অনেকের মধ্যেই এই অভ্যাস থাকে। অধিকাংশ সময়ই কাউকে, বিশেষত বাচ্চাদের ঠোঁট কামড়াতে দেখলে তাদের ঠোঁট মোটা হওয়ার বিষয় সতর্ক করে ক্ষান্ত হই। তবে এটি নিছকই অভ্যাস নয়, কোনও গভীর রোগের দিকে ইশারা করতে পারে এই প্রবণতা। মৌখিক রোগ বিশেষজ্ঞরা এমন নানান সমস্যা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। এই সমস্যাগুলি আমাদের সকলের জানাও নেই। কোনও ব্যক্তি ঠোঁট কেন কামড়ায় সে বিষয় বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করেছেন। এই প্রবণতার পিছনে প্রধানত পাঁচটি সমস্যার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
আর্থ্রাইটিস
এটি টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট ডিসঅর্ডারের একটি সাধারণ কারণ, যা সাধারণত একটি লক্ষণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। এর সামান্য বা গভীর লক্ষণ হতে পারে। আবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাণঘাতীও হতে পারে, যা রুমেটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে হয়ে থাকে। আর্থ্রাইটিসের প্রকারভেদের ওপর ভিত্তি করে চোয়ালের আকারে পরিবর্তন, ফোলাভাব, মুখ খোলার সঙ্গে জড়িত নানান সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে ঠোঁট কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চোয়ালে ব্যথা, মাথা ব্যথা বা দাঁতে ব্যথা থাকলে এটি আর্থ্রাইটিসের সঙ্কেত।
দাঁত পেষার সমস্যা
দাঁত পেষার ফলেও টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট ডিসঅর্ডারের সমস্যা বাড়তে পারে। এটি আবার ঠোঁট কামড়ানোর ইঙ্গিত হতে পারে। দাঁত পেষার সঙ্গে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্ট্রেসের কারণে এমন হতে পারে। প্রায়ই রাতে ঘুমানোর সময় বা অজান্তেই এটি হয়ে যায়। তবে ঠোঁট কামড়ানোর সঙ্গে মুখমণ্ডলে ব্যথা বা মাথা ব্যথা হলেও দাঁত পেষার সমস্যা বাড়তে পারে।
দাঁতের আকার
কোনও ব্যক্তির দাঁতের রেখা সোজা না-হলে, তাঁদের মধ্যেও ঠোঁট কাটার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চোয়ালের ওপরের ও নীচের দাঁত এক আকারের হয় না বা সাধারণ আকারেরও হয় না। তবে এটি কোনও গভীর সমস্যা নয়। কিন্তু ব্যথা, ঠোঁট কাঁটার সমস্যা বা চেবানো শুরু করলে অবশ্যই চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করুন।
মানসিক অবসাদ
মানসিক সমস্যার কারণে প্রায়ই ব্যক্তি ঠোঁট কামড়াতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। শরীরের পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ মানসিক অবসাদের কারণ হতে পারে। ঠোঁট কামড়ানোও এর সঙ্গে যুক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে সাধারণত ঠোঁট চেবানো কোনও বড় সমস্যার দিকে ইঙ্গিত দেয় না। তবে এটি একটি বদ অভ্যাস। এর ফলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং জ্বালাও করতে পারে। তাঁদের মতে, আপনার বা আপনার সন্তানের যদি ঠোঁট কামড়ানোর অভ্যাস থাকে, তা হলে শীঘ্র দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তাঁরা এর কারণ ও গাম্ভীর্য বুঝবেন এবং আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন। ভালো চিকিৎসার পরামর্শ পাওয়া যাবে তাঁদের কাছ থেকে।