কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা সেল মেমব্রেনে পাওয়া যায় এবং যা রক্তে পরিবাহিত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান। কিন্তু কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে সর্বনাশ! বাড়ে হৃদরোগ এবং রক্ত সংবহণ জাতীয় অসুখের ঝুঁকি! হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক-এর আশঙ্কাও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। আমরা সবাই কম-বেশি শুনে থাকি, কোলেস্টেরল থাকলে ডিমের কুসুম খাওয়া উচিত না! কিন্তু ডিমের কুসুম কি আদৌ কোলেস্টেরল বাড়ায় ? কী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?
ডিমের কুসুম ডায়েটারি কোলেস্টেরলের অন্যতম উৎস। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে যা ফসফার লিপিডের উৎস। এগুলি বায়োঅ্যাকটিভ লিপিড বা চর্বি যা কোলেস্টেরল বিপাকের উপর উপকারী প্রভাব ফেলে। এটি প্রদাহ এবং HDL (ভালো কোলেস্টেরল) ফাংশনেও উপকারী প্রভাব ফেলে। গবেষণা বলছে, ডিম শরীরে গিয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। যদিও ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল, এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, আয়রন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, দস্তা এবং অন্যান্য উপকারী পুষ্টি রয়েছে। ফলে আপনি সারাদিন প্রচুর পরিমাণে এনার্জির যোগান পান।
ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, রিবোফ্লোবিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়। এমনকি অনেক দিন সংরক্ষিত বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার চেয়ে ডিম ভালো বিকল্প খাদ্য হতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে ডিম যাঁরা খান তাঁদের হার্টের ঝুঁকি অনেক বেশি তখনই, যখন ডিম ভাজা হয় তেল বা মাখনের দ্বারা। কিছু গবেষণা বলেছে, ডিম ঘন ঘন খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। আবার অন্য এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ডিম শরীরের মোটেও ক্ষতি করে না। তবে, যদি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ইথিমধ্যে বেশি হয়, তবে ডিম না খাওয়াই ভাল। পুষ্টিবিদের মতে, আমাদের খুব বেশি পরিমাণে বা খুব কম ডিম খাওয়া উচিত নয়। দেহের ভারসাম্য বজায় রেখে ডিম খাওয়া দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত ২টো ডিম খাওয়া সঠিক।