পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হতে চলেছে ভয়ঙ্কর সুন্দর, জলের অবিসংবাদী রাজা বলা যেতে পারে। সেই হাঙর।
আইইউসিএন-এর সমীক্ষা
সমুদ্রপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন(IUCN) এর শেষ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে লাল(Red List) তালিকাভুক্ত করা হয়েছে হাঙরকে। সেই সঙ্গে বিলুপ্তির দিকে যেতে পারে কোমডো ড্রাগন বলেও সমীক্ষায় বলা হয়েছে।
বিলুপ্তিই ভবিষ্যত ?
ফলে চিন্তার ভাঁজ সমুদ্র বিজ্ঞানীদের কপালে। কারণ বিপুল পরিমাণ হাঙ্গর ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে শুরু করলে পরিবেশ ও তার প্রভাব পড়তে বাধ্য বাস্তুতন্ত্র ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
আবহাওয়ার পরিবর্তন অন্যতম কারণ
আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে হাঙরগুলি বিলুপ্তির পথে যেতে চলেছে বলে জানান তারা। শেষ যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কন্সেরভেশন অফ নেচার এর তরফে, সেখানে বলা হয়েছে যেখানে বিপদ তালিকায় থাকা টুনা মাছ ধীরে ধীরে বাড়ছে, সেখানে হাঙরের সংখ্যা বিপজ্জনকভাবে কমে যাচ্ছে।
টুনার সংখ্যা বাড়ছে
নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে চার ধরণের টুনা বাণিজ্যিকভাবে ধরা হয়। ওই টুনাগুলি ধীরে ধীরে সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। গত এক দশকের হিসেব ধরে এই সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শেষ যে রিপোর্টটি আইইউসিএন এর তরফ এ দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি বিপদজনক প্রাণীর নাম, যেগুলি বিলুপ্তির পথে যেতে চলেছে।
রিপোর্ট পেশ
সমুদ্রে চাপ পড়া সত্ত্বেও এই ধরনের প্রাণীগুলি বেঁচে থাকতে পারে, যদি ঠিকমতো সেগুলিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আইইউসিএন এর director-general ব্রুনো ওবারেল জানিয়েছেন, সমুদ্র প্রাণীগুলোকে এবং সমুদ্র জীবকে সংরক্ষণে সবচেয়ে বড় কনফারেন্স কনজারভেশন কংগ্রেসের চলাকালীন এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। যা ফ্রান্সের মার্সেল শহরে অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ সমীক্ষা রিপোর্ট সতর্কবার্তা
শেষ যে তালিকাটি দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে গোটা পৃথিবীর সমস্ত সমুদ্রে, যেখানে যেখানে হাঙরের আস্তানা, সমস্ত জায়গাতেই হাঙর বিপজ্জনকভাবে কমতে শুরু করেছে। তার একটা অন্যতম কারণ যেখানে যথেচ্ছভাবে শিকার করা, তেমনই পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে ও হাঙরের প্রজনন অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। বর্তমানে গোটা পৃথিবীর যত হাঙর রয়েছে, তার মধ্যে ৩৭ শতাংশ এই মুহূর্তে বিলুক্তির দিকে।
বাসস্থান হারাচ্ছে
গোটা পৃথিবীর সমুদ্রের উপর সংশ্লিষ্ট দেশগুলির পরিচালনার অভাবেই এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আইইউসিএন-এর একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সমস্ত রকম বিপন্ন হাঙরগুলি প্রচুর পরিমাণে বিগত কয়েক দশক ধরে ধরা হচ্ছে। যা তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং বিস্তারে বাধা। তা ছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানের পরিবর্তন হয়েছে।
বিপন্নের তালিকায় কমোডো ড্রাগণও
এর পাশাপাশি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টিকটিকি কোমোডো ড্রাগন এই মুহূর্তে বিপন্নের তালিকায় ঢুকে গিয়েছে। আগামী ৪৫ বছরে কোমোডো ড্রাগন অন্তত ৩০ শতাংশ বাসস্থান হারাবে বলে মনে করছেন তারা। সংগঠনের তরফ-এ সমীক্ষা চালিয়ে বলা হয়েছে, সাতটি বিপন্ন প্রাণীর মধ্যে টুনা ফিশ এর কয়েকটি প্রজাতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। যথেচ্ছ শিকার বন্ধ হতেই এই রিকভারি বলে তারা মনে করছেন।