দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গরমের জেরে এখনও সবার খারাপ অবস্থা। গরমে মানুষের জীবন যেন আরও কঠিন হয়েছে। গরমের তীব্রতায় এসি-কুলার কিছুই যেন কাজ করছে না। দেশের অনেক এলাকায় তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রিতে ছুঁয়েছে। দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিট স্ট্রোক হলে, শরীর তার ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং ঘামও শরীরকে ঠান্ডা করতে ব্যর্থ হয়। সেক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। জানুন হিট স্ট্রোক কী, এর লক্ষণ এবং প্রতিকার কী।
হিট স্ট্রোক কী
সাধারণত শরীর যখন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়, তখন হিট স্ট্রোক হয়। সেসময় শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সহজে হ্রাস পায় না। হিট স্ট্রোক হলে শরীরে ঘাম হয় না, যা অত্যন্ত ক্ষতিকারক। হিট স্ট্রোক হলে, শরীরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি বাড়তে পারে। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো শনাক্ত করা গেলে এবং সময়মতো চিকিৎসা করা সম্ভব। এজন্যে সমস্ত লক্ষণ চিহ্নিত করা জরুরি। মাথাব্যথা, প্রচণ্ড জ্বর, জ্ঞান হারিয়ে যাওয়া, মানসিক অবস্থার অবনতি, গা বমিভাব, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ত্বক নরম হয়ে যাওয়া, ত্বকের শুষ্কতা এবং ডিমেনশিয়া, এর সাধারণ লক্ষণ।
হিট স্ট্রোকের কারণ
খুব গরম জায়গায় বেশিক্ষণ থাকলে, হিট স্ট্রোক হতে পারে। কেউ যদি ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে হঠাৎ গরম জায়গায় যান, তাহলে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। গরম আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ব্যায়াম করাও হিট স্ট্রোকের একটি বড় কারণ। গরমে প্রচুর ঘামের পর পর্যাপ্ত জল পান না করলে, এই সমস্যা হতে পারে।
কেউ যদি খুব বেশি অ্যালকোহল পান করে, সেক্ষেত্রেও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। এটিও হিট স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। আপনি যদি গ্রীষ্মে এমন পোশাক পরেন যা ঘাম শরীরের বাইরে এবং হাওয়া শরীরের ভিতরে না যায়, এটিও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কারও হিট স্ট্রোক হয়, তাহলে প্রাথমিক কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদে রাখবেন না, শরীরে হাওয়া ঢোকার ব্যবস্থা করুন। শরীর ঠাণ্ডা করার জন্য তাকে কুলার বা ফ্যানের সামনে বসান, ঠান্ডা জলে স্নান করুন, ঠাণ্ডা জলে একটি কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে নিন। মাথায় ঠাণ্ডা জল দিয়ে বরফের প্যাক বা কাপড় ভিজিয়ে রাখুন এবং মাথায়, ঘাড়ে, বগলে ও কোমরে ঠাণ্ডা জলে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে রাখুন।