কফি অনেকেরই পছন্দের পানীয়। এক কাপ স্ট্রং কফি খেলে শরীর হয়ে ওঠে চনমনে। এক পেয়ালা কফি দিয়ে দিন শুরু হয় বহু মানুষের। তার পর বিভিন্ন সময়ে কফির কাপে চুমুক দেন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী বছরগুলিতে এশিয়া জুড়ে কফির চাহিদা বাড়তে পারে। কিন্তু কফি কি শরীরের পক্ষে উপকারী? আর খেলেও কতটা কফিতে লাভ?
কফির গুণাগুণ নিয়ে ৩টি গবেষণা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কফি হার্টের জন্য উপকারী। তবে বয়সও বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, হৃদরোগ, হার্ট ফেইলিউর, হার্ট রেট সমস্যা বা যে কোনও কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমায় কফি-পান। আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির ৭১ তম বার্ষিক বিজ্ঞান অধিবেশনে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের বেকার হার্ট ইনস্টিটিউটের অ্যারিথমিয়ার অধ্যাপক এবং গবেষণার প্রধান পিটার কিসলার এবং তাঁর দল ইউকে বায়োব্যাঙ্কের একটি বৃহৎ ডেটাবেস থেকে তথ্য ব্যবহার করেছেন। এতে রয়েছে ৫ লক্ষের বেশি মানুষের স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি। পিটারের মতে, কফি হার্টের রেট বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেকেই উদ্বেগে পড়েন। তবে গবেষণা বলছে, কফি হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী এবং সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর। কফি পান করলে কোনও ক্ষতি হয় না। বরং হার্টের স্বাস্থ্যের উপকার হয়।
কত কাপ খেতে পারেন?
হংকং-এর মাটিল্ডা ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে কর্মরত ডায়েটিশিয়ান ক্যারেন চংয়ের কথায়,'অতিরিক্ত কফি খাওয়া উচিত নয়। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে বারবার কফি পানের কথা বলব না। দিনে দুই বা তিন কাপ কফি খাওয়া যেতেই পারে। দুই থেকে তিন কাপ কফিতে থাকে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফাইন।'
কাদের কফি খাওয়া উচিত নয়?
কারেন চং জানান, ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফাইন না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। যা প্রায় চার থেকে পাঁচ কাপ কফির সমতুল্য। দিনে চার কাপের বেশি হলে ক্যাফাইন-মুক্ত কফি খেতে পারেন। এতে সাধারণ কফির তুলনায় প্রায় ৯৭ শতাংশ কম ক্যাফাইন থাকে। তিনি যোগ করেছেন, যাঁদের কফি খেলে সমস্যা হয়, তাঁদের এড়িয়ে তলা উচিত। অতিরিক্ত ক্যাফাইন হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে। মানুষ খিটখিটে হয়ে ওঠেন। শিশু ও প্রবীণদের কফি ন খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন চং। তাঁর যুক্তি, ক্যাফাইন স্নায়ুতে প্রভাব ফেলে। গর্ভবতী বা সদ্য সন্তান হয়েছে এমন মায়েদের দিনে এক বা দুই কাপের বেশি কফি খাওয়া অনুচিত। ক্যাফাইন পাকস্থলিতে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড তৈরি করতে পারে। সে কারণে গ্যাসের সমস্যা থাকলে এড়িয়ে যাওয়া শ্রেয়।
কফি-নামা
- অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে।
- কফিতে মেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েড। কোষের ভাঙন ঠেকাতে এবং রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- সম্পূর্ণ উপকারিতা পেতে চাইলে কফির সঙ্গে দুধ মিশিয়ে পান করুন। তবে কফিতে ক্রিম বা চিনি মেশাবেন না।
আরও পড়ুন- সকালে উঠেই খান সোহার এই সব সুপারফুড, বয়স বাড়লেও থাকবেন 'চিরসবুজ'