প্রত্যেক মাসে মহিলাদের পিরিয়ডসের মতো বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এই পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের জন্য প্রত্যেক মাসে মেয়েদের পেটে, কোমরে অসহ্য ব্যথা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় মহিলাদের বেশি করে বিশ্রাম করা উচিত। তবে এক গবেষণায় চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চের এক আর্টিকালে বলা হয়েছে, যে সব মহিলারা ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোন, তাঁদের পিরিয়ডসের সময় হেভি ব্লিডিং বা অনিয়মিত পিরিয়ডসের মতো সমস্যা দেখা দেয়। ওই গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে যাঁরা ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোন তাঁদের অনিয়মিত পিরিয়ডসের সম্ভাবনা ৪৪ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে, এর সঙ্গে পিরিয়ডসের সময় ৭০ শতাংশ হেভি ব্লিডিং হয়ে থাকে। সেই তুলনায় যাঁদের পর্যাপ্ত ঘুম হয় তাঁদের এই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় না।
গবেষণায় আর কী পাওয়া গিয়েছে
জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চ ২৪ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ৫৭৪ জন মহিলাদের পিরিয়ডসের সার্কেলের ওপর গবেষণা করে দেখেছে এবং তারা এই সময় বোঝার চেষ্টা করেছে যে যাদের হেভি ব্লিডিং ও অনিয়মিত পিরিয়ড হয়, তাদের সারাদিন কেমন কাটে। গবেষণায় উঠে এসেছে, যে সব মহিলাদের এই দুটো সমস্যা রয়েছে তারা পুরোদিন কাজের সময় ক্লান্ত অনুভব করেন, ঘুম ঘুম ভাব ও মাথা ব্যথার মতো সমস্যাও দেখা দেয়।
প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রম বা পিএমএস কী
পিরিয়ডস শুরু হওয়ার আগে কিছু লক্ষণে এটা বোঝা যায়। যার মধ্যে ক্লান্ত হওয়া, খিটখিটে ভাব, রাগ হওয়া এগুলি অন্যতম। এগুলিকে প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রম বলে। পিএমএস-এর আরও কিছু লক্ষণ হল টেনশন ও উদ্বেগ, মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, ঘুম না আসা, মুড সুইং ও খিটখিটে ভাব ও রাগ ইত্যাদি। ঘুম কম হওয়ার জন্য পিরিয়ডসের ব্যথা আরও বেড়ে যায়। যার ফলে পিএমএস-এর ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় এই উপায়গুলি মেনে চললে ঘুম আরও ভালো হবে।
ঘুমের শিডিউল তৈরি করুন
যদি আপনি ঘুমের জন্য সঠিক সময় মেনে চলেন তবে শুধু পিরিয়ডসের সময়ই নয়, রোজই একই সময়ে ঘুম আসবে। তাই নিয়মিত সঠিক সময়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করুন।
হিট থেরাপি
ঘুমোনোর সময় যদি পেটে অসহ্য ব্যথা অনুভব হয় তবে আপনি হিট থেরাপি প্রয়োগ করতে পারেন। শোওয়ার আগে পেটে হিটিং প্যাড ব্যবহার করুন অথবা শোওয়ার আগে একেবারে রিল্যাক্স হয়ে যান। এতে ব্যথা একটু কম হবে এবং আপনিও ঘুমোতে পারবেন।
রিল্যাক্স করুন
শোওয়ার আগে আপনি চাইলে লম্বা ও গভীর শ্বাস নিন, পেশিগুলোকে শান্ত করুন এবং স্ট্রেস কম করার জন্য মেডিটেশন বা হাল্কা কোনও যোগাসনও করতে পারেন। এতে মানসিকভাবে আপনি ভালো অনুভব করবেন এবং আপনার ঘুমও ভালো হবে।
হাইড্রেট রাখুন
পুরোদিন নিজেকে হাইড্রেট করে রাখুন। জল খান বেশি করে। এটি আপনার অস্বস্তি কমাতে পারে এবং আপনার পেট ফোলা অনুভব হবে না। এসব সমস্যার সম্মুখীন না হলে রাতে ভালো ঘুম হবে।