বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাঁদের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং যাঁরা তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেন না, তাঁদের সন্তান ধারণের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে কোনও ব্যক্তি ৪০ বছর বয়সে পৌঁছালে তাঁর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে। দেখা যায় যদি মহিলারা গর্ভবতী হতে না পারেন, সেক্ষেত্রে প্রায় ৫০ শতাংশ ঘটনায় নেপথ্যে থাকে পুরুষদের শারীরিক সমস্যা।
গুরগাঁওয়ের নোভা সাউথেন্ড আইভিএফ এবং ফার্টিলিটির বিশেষজ্ঞ ডক্টর গুঞ্জন সবরওয়ালের মতে, গত কয়েক দশকে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গিয়েছে। প্রতি ৮ জন দম্পতির মধ্যে ১ জন গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ ঘটনা পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের (Male infertility) কারণে হয়। খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, ল্যাপটপ ও মোবাইলের বিকিরণ, ধূমপান, অ্যালকোহল, ওষুধ ইত্যাদিও প্রজনন হারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দৈনন্দিন কাজকর্মের উন্নতি এবং লাইফস্টাইলের পরিবর্তন করে প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে।
পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতার ক্ষতি করে এমন ৫টি খারাপ অভ্যাস সম্পর্কে জেনে নিন গুঞ্জন আইভিএফ ওয়ার্ল্ডের ফার্টিলিটি এক্সপার্ট ডাঃ গুঞ্জন গুপ্তা এবং ডাঃ গরিমা সিং-এর কাছ থেকে।
১. ধূমপান এবং মদ্যপান (Smoking and Drinking) : তামাক এবং ধূমপান বীর্যের গুণমান হ্রাস করে এবং শুক্রাণুর ডিএনএকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়াও, অ্যালকোহল পান করলে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে পারে, যা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এবং শুক্রাণু উৎপাদন হ্রাস করতে পারে।
২. স্থূলতা (Obesity) : সাধারণ BMI বিভাগের পুরুষদের তুলনায় স্থূল পুরুষদের বীর্যের গুণমান কম। আসলে, স্থূল মানুষের শুক্রাণুর ডিএনএ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যা প্রজননের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
৩. স্ট্রেস (Stress) : স্ট্রেস টেস্টোস্টেরনকে ভারসাম্যহীনতার দিকে পরিচালিত করে এবং তারপরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে।
৪. ওষুধের ব্যবহার (Drug Use) : অনেকে পেশী এবং স্ট্যামিনা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন। এটি অণ্ডকোষ সঙ্কুচিত করতে পারে এবং শুক্রাণু উৎপাদন কমাতে পারে। এছাড়াও, কোকেন বা মারিজুয়ানা ব্যবহার শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গুণমানকে সাময়িকভাবে হ্রাস করতে পারে।
৫. বসে থাকা জীবনধারা (Sedentary Lifestyle) : বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বসে থাকা জীবনযাপনের ফলে শুক্রাণুর গুণমান, পরিমাণ এবং স্ট্যামিনা কমে যায়।
তাই প্রজনন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো থেকে সবসময় দূরে থাকুন। অন্যদিকে, আপনি যদি এই ধরনের সংক্রান্ত কোনও সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ও সঠিক চিকিৎসা করান।
আরও পড়ুন - আধারের সঙ্গে IRCTC Account-এর লিঙ্ক করুন এভাবে, পাবেন বাড়তি সুযোগ