মাঝেমধ্যেই শোনা যায় কোনও কোনও ব্যক্তি বলেন যে তাঁদের খুব বেশি গরম লাগে। সাধারণত কোথাও যাতায়াতের সময় রোদে বেরোলে প্রথম একটু বেশি গরম লাগলেও পরে দেহ তা মানিয়ে নেয়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা থাকে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। অনেক সময় আবার দেহের তাপমাত্রা বয়স বা সারাদিনের কাজকর্মের ওপরেও নির্ভর করে। যদিও অনেকেই থাকেন যাঁদের দেহে গরম ও শীত, দুটোই অন্যদের থেকে বেশি লাগে। চলুন দেনে নেওয়া যাক এর কারণগুলি।
বয়স - বয়স্করা অল্প বয়স্কদের মতো শরীরের তাপমাত্রা ম্যানেজ করতে পারেন না। কারণ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মেটাবলিজম অনেকটাই কমে যায়। ধীর মেটাবলিজমের কারণে, শরীরের তাপমাত্রা অনেকটাই নেমে যেতে পারে। এই কারণে বয়স্কদের হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা খুব ফাস্ট লাইফ লিড করেন তারাও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারতেন।
লিঙ্গ - মহিলাদের শরীরে পুরুদের তুলনায় কম মাংসপেশী থাকে। তাই মহিলাদের ত্বকের রন্ধ্র দিয়ে কম পরিমান গরম উৎপন্ন হয়। আর সেই কারণেই পুরুষের তুলনায় মহিলাদের গরম কম লাগে। তবে মেনোপজের পর বা মধ্যবয়স্কা মহিলাদের অবশ্য পুরুষদের তুলনায় বেশি গরম লাগে। কারণ সেই সময় মহিলাদের শরীরে হরমোনের বেশকিছু পরিবর্তন আসে।
দেহের আকার - বিশেষজ্ঞরা মনে করেন খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা লাগার নেপথ্যে দেহের আকারও একটি কারণ হতে পারে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজির এক গবেষক বলেন, শরীরের আকার যত বড় হবে গরমের অনুভূতিও তততাই বেশি হবে। আবার দেহের আকার বড় হলে তা ঠান্ডা হতেও বেশি সময় নেয়।
দেহের চর্বি - কিছু গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, যাঁদের শরীরে চর্বি বেশি, তাঁরা বাকিদের তুলনায় বেশি গরম অনুভব করেন। কারণ অতিরিক্ত চর্বি শরীরকে উত্তপ্ত করে। দেহে যখন গরম অনুভব হয় তখন রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয় এবং সেখান দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়, যা ত্বক পর্যন্ত চলে যায়। এরপর ত্বকের মধ্য দিয়ে তাপ বের হয়ে যায়। কিন্তু যাঁদের শরীরে চর্বি বেশি তাঁদের ত্বকের নিচে জমে থাকা ফ্যাট গরমে বের হতে দেয় না। ফলে তাঁদের দেহে দীর্ঘ সময় ধরে গরম অনুভূত হয়।
মেডিক্যাল পরিস্থিতি - কিছু রোগের কারণেও শরীরের তাপমাত্রায় প্রভাব পড়ে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, হাইপোথাইরয়েডিজম, যাকে আন্ডারঅ্যাক্টিভ থাইরয়েডও বলা হয়। এটি তখনই ঘটে যখন থাইরয়েড গ্রন্থি বিপাক, শক্তির মাত্রা ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্যকারী হরমোন পর্যাপ্ত পরিমানে উৎপন্ন করে না।
Raynaud একটি এমন ধরনের রোগ যাতে, শরীরের কিছু অংশ যেমন পায়ের পাতা ও পায়ের আঙুল ঠান্ডা এবং অসাড় হয়ে যায়। এটি ঠান্ডা আবহাওয়ায় বা মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে। এই সমস্যার কারণে শরীরের ছোট ছোট ধমনীগুলো আরও সরু হয়ে যায়। যার কারণে আক্রান্ত স্থানে রক্ত প্রবাহ আরও কম হয়ে যায়।
আরও পড়ুন - AC-র হাওয়ায় মাথা যন্ত্রণা করে? এই ৭ শারীরিক সমস্যা ভুলেও অবহেলা নয়