নারী-পুরুষের প্রেম আদিম। কোনও বাধ মানে না! গোপন প্রহরে উত্তাল হয়ে ওঠে দুই শরীর ও মন। ঘটে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। অনেকেই বলেন, মহিলা ও পুরুষের আদি রসের সৌজন্যে ঘনিষ্ঠতার পর কমে উদ্বেগ। মানসিক চাপ থেকেও মুক্তি মেলে। আসলে পুরোটাই কারসাজি অক্সিটোসিন হরমোনের, মত বিশেষজ্ঞদের। আগের চেয়ে ব্যস্ততা ও টেনশন বেড়েছে। অফিসের প্রচুর কাজে জেরবার জীবন! এই সময় প্রিয় মানুষের সঙ্গে দু'দণ্ডের অভিসার মনকে প্রফুল্ল করে। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি দেয়। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই ঘটে তার উল্টো। তাঁদের মাথায় আসতে থাকে নেতিবাচক ভাবনা ও উদ্বেগ। অস্থির হয়ে ওঠেন তাঁরা। গ্রাস করে অবসাদ। কেন এটা হয় জানেন?
আদিম প্রেমের পর নারীদের মনে যে কষ্ট, উদ্বেগ আসে সেই পরস্থিতিকে বলে পোস্ট-কোইটাল ডিসফোরিয়া (Post Coital Dysphoria)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা শুধু নারীদের জন্যই নয়, বরং পুরুষদেরও অবসাদ বা অজানা কষ্ট গ্রাস করতে পারে। উভয়ের সম্মতি থাকলেও অস্বস্তি বোধ করতে পারেন কেউ একজন। এমনকি দুজনের পুরোদমে আনন্দ পেলেও আসতে পারে এই ধরনের অবসাদ।
দম্পতিদের মধ্যে পোস্ট কোইটাল ডিসফোরিয়া খুব সাধারণ। অনেকেই ভাবেন এটা বোধহয় কোনও অসুখ। তা কিন্তু নয়। দুজন মানুষ পরস্পরকে ভালোবাসলেও এর সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী কারণে এটা হতে পারে-
শারীরিক নির্যাতনের ইতিহাস- আগের তিক্ত অভিজ্ঞতা। ছোটবেলা বা কিশোর বয়সে এই ধরনের নির্যাতনের শিকার হলে মহিলারা উদ্বেগে পড়েন।
আরও পড়ুন- শরীরের এই ৭ অঙ্গ বিকল হলেই বিপদ! সুস্থ থাকতে কী কী খেতেই হবে
উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ- কোনও ধরনের মানসিক চাপ থাকলেও এটা হতে পারে। তাই মানসিক চাপকে ফু দিয়ে উড়িয়ে দিন। দরকারে ধ্যান করুন।
হরমোনের ওঠানামা- ঘনিষ্ঠতার সময় ও পরে নানা ধরনের হরমোনের খেলা চলতে থাকে। সেই খেলায় ক্লিন বোল্ড হয়ে যেতে পারেন।
শরীরের গঠন নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাব- নারী বা পুরুষের নিজেদের শরীরের গঠন নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকলে বিষন্ন হতে পারে। তাই আত্মবিশ্বাসী হোন। দুনিয়ায় সব রংই সুন্দর, তেমনই সব মানুষই নিজেদের মতো করে সুন্দর।
ঘনিষ্ঠতার সময় কোনও কাজ- নারী ও পুরুষের ঘনিষ্ঠতার সময় নানা ধরনের কথা বলেন। বিবিধ ভঙ্গিকে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করেন। সেই মুহূর্তে তা ভালো লাগলেও পরে সেগুলি মনে করে মন ভারাক্রান্ত হতে পারে। অনেকের মনে হয়,'ছি ছি এসব কী করলাম!'
পার্টনারের প্রতি বিশ্বাসের অভাব- অনেকে ক্ষেত্রে কাছের মানুষ ততটা বিশ্বাসযোগ্য হন না। তাঁকে কি ভরসা করা যায় এই প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। তাঁর সঙ্গে সময় কাটানো ঠিক হল কি? এমন সব ভাবনা আসে মাথায়।
আরও পড়ুন- বিয়েতে কন্যাকে কখনও এই ৪ জিনিস উপহার নয়, সংসারে ঘোর অমঙ্গল
উপায় কী?
- মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলে ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে মনকে শান্ত করার চেষ্টা করুন।
- মনকে শান্ত না করতে পারলে অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে থাকুন।
- নিজেকে প্রশ্ন করুন- আমার কি চাই? এখন কী করব?
- নিজের পার্টনারের সঙ্গে কথা বলুন। তাঁকে জড়িয়ে ধরতেও পারেন।
পোস্ট-কোইটাল ডিসফোরিয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাইতে কোন দ্বিধা থাকা উচিত নয়। মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা এই অবস্থা কাটিয়ে দিতে পারে। সঙ্গীর সঙ্গে পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা বলা, ধ্যান ও শরীরচর্চার মাধ্যমে তা সম্ভব। পার্টনার বিশ্বাসযোগ্য হলে অচিরেই এই ধরনের সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়।