Sikkim Offbeat Temi Tea Garden: একদিনে খাড়া উঠে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর পাহাড়ের অন্য ঢাল বেয়ে নেমে গিয়েছে সবুজ চা বাগান। এর মাঝে শেডট্রিগুলি আরও সুন্দর। কারণ এগুলি সব চেরি ব্লসম গাছ। শেড ট্রির নীচে বসে জিরিয়ে নেওয়াও যায়, আবার শেড ট্রি থেকে চেরি তুলে খাওয়াও যায়। বিদেশের কোনও লোকেশন নয়, আমাদের পর্যটন সার্কিটেই রয়েছে এমন অপূর্ব চা বাগান। তাও আবার এটি রাজ্যের একমাত্র চা-বাগান।
প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের একমাত্র চা বাগান টেমি। আমরা ঘুরতে গিয়ে গ্যাংটক, ছাঙ্গু, লাচুং, লাচেন দেখে বেড়াই। অনেকেই দক্ষিণ সিকিমে পা মাড়াই না। কিন্তু না দেখে থাকলে মিস করেছেন। এবার সিকিম এলে টেমিতে রুম বুক করুন। সিকিমের বসন্ত মানেই লাল টুকটুকে রডোড্রেনডন। কিন্তু টেমি চা বাগানের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে চেরি ব্লসমে। টেমি হল সিকিমের একমাত্র চা বাগান।
টেমির ইতিহাস
১৯৬২ সালের সিকিম সরকার এই টেমি চা বাগান টি প্রতিষ্ঠা করে। যা দক্ষিণ সিকিমের টেমিতে অবস্থিত। রাবাংলা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এটি সিকিমের একমাত্র চা বাগান এবং ভারত ও বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চা বাগানের মধ্যে একটি। এখানে শীর্ষমানের চা উৎপাদিত হয় যার আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত। জৈব চা উৎপাদনের জন্য সুইজারল্যান্ড এর আইএমও দ্বারা নির্দেশিত নির্দেশিকা টেমির চা বাগানে গৃহীত হয়েছে। জৈব চা উৎপাদন প্রকল্প ২০০৫ সালের এপ্রিলে শুরু হয় এবং সমাপ্তির পথেই প্রকল্প ক্রমবর্ধমান জৈবসারে চা চাষ করে। এগ্রো কেমিক্যালগুলি বাড়ানো যায় যা উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেয়।
চা বাগান নির্মাণের আগে জমিটিতে শেরপাদের গ্রাম ছিল। মিশনারি বিল্ডিং এর চারপাশের বন বিভাগের প্রায় ১০ একর নার্সারি ছিল ব্রিটিশ শাসনের সময় এই সাইটটি ১৯০০ এর দশকে প্রথম দিকে স্কটিশ মিশনারি বিল্ডিং হিসেবে একটি মাইলফলক ছিল। ১৯৫৪ সালে সিকিম সরকার কর্তৃক ভবনগুলি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৯৪ ও ৯৫ সালে পরপর দু'বছর ধরে টেমি টি গার্ডেনকে ভারতবর্ষ বোর্ড অল ইন্ডিয়া কোয়ালিটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।
সিকিমের জনপ্রিয় অফবিট ডেস্টিনেশন এটি। পাহাড়ি গ্রামের নৈসর্গিক দৃশ্য মন কেড়ে নেয়। সেখানে দৃশ্য আরও মনোরম হয় পাহাড়ি ফুলে। মূলত রডোড্রেনডনের জন্যই জনপ্রিয় সিকিমের বসন্ত। কিন্তু টেমি হল সিকিমের একমাত্র ডেস্টিনেশন যেখানে পর্যটকেরা ভিড় করে চেরি ব্লসমের খোঁজে। প্রিয়জনের সঙ্গে প্রকৃতির কোলে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর জন্য সেরা ঠিকানা এই টেমি চা বাগান। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে গিয়েছে সবুজ চা বাগান। যতদূর চোখ যায়, শুধুই সবুজ। আর অন্যদিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে তুষারবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে এই সবচেয়ে রোম্যান্টিক দৃশ্য হল টেমি চা বাগানের রিসর্টে বসে সূর্যোদয় দেখা।
ভোরবেলায় বেড়িয়ে পড়ুন চা বাগানের রাস্তা ধরে মর্নিং ওয়াকে। আপনার সঙ্গে পা মিলিয়ে চলবে এই পাহাড়ির সুগন্ধ। ভোরের স্নিগ্ধতায় ছুঁয়ে যাবে আপনার মন। ভোর থেকেই আপনার কানকে ব্যস্ত রাখবে পাখিদের কলরব। পক্ষীপ্রেমীদের জন্যও স্বর্গোদ্যান এই চা বাগান। বেলা বাড়লে বেড়িয়ে পড়তে পারেন রাবাংলা কিংবা নামচির উদ্দেশ্যে। সামদ্রুপ মনাস্ট্রি, নামচি চারধাম, নামচি রোপওয়ে, রক গার্ডেন, রাভাংলা বুদ্ধ পার্কের মত জায়গাগুলি আপনি টেমি চা বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ১১৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টেমি। দক্ষিণ সিকিমের রাবাংলা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই সবুজে মোড়া স্বর্গ। টেমি চা বাগানের মধ্যে এবং আশেপাশের জায়গায় থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে, হোটেল রয়েছে। এখানে থাকা খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু ১৫০০/- খরচ হবে। তাহলে গরমের ছুটি কাটাতে কবে যাচ্ছেন এখানে?