বাঙালি হেঁসেল মানেই রসনার বাহার। আমিষের পাশাপাশি নিরামিষ খাবারেও বাঙালি রন্ধনপটিয়সীদের টেক্কা দেওয়া কঠিন। ফেলে দেওয়া টুকরো টাকরা তরকারি, আনাজের খোসা দিয়েও যে রকমারি পদ রাঁধা যায়, তা বাঙালি রসুইঘর ছাড়া বোঝা মুশকিল। এই বাঙালির হেঁশেলেই হয়ে থাকে ছেঁচকি। নানান ধরনের ছেঁচকি খেয়ে থাকলেও, এই পদটির এমন কেন নাম তা অনেকেই জানেন না।
পেঁপে, মুলো সহ একাধিক তরি-তরকারি দিয়ে ছেঁচকি রান্না হয়। আগেকার দিনের হেঁশেলে ছেঁচকি-ঘণ্ট নিত্যদিনের মেনুতে থাকত। তবে এখন আর সেইসব পদ আর পাওয়া যায় না। আসুন জেনে নিই ছেঁচকির বৈশিষ্ট্য কী কী।
-ছেঁচকির জন্য তরকারি মিহি করে কাটা হয়। ছেঁচকির আনাজের জন্য বেছে নিতে হয় পাকা তরিতরকারি।
-ছেঁচকির জন্য অল্প তেলে পাঁচফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দেওয়াই নিয়ম। ছেঁচকি একেবারেই নিরামিষ পদ।
-সাধারণত সবজি পাকা হয়ে গেলে বা বুড়িয়ে গেলে তা নষ্ট না করে ছেঁচকিতে ব্যবহার করা হয়।
-কুমড়ো, পেঁপে, থোড়, মুলো ইত্যাদি সবজি অথবা সব সবজি মিশিয়েও ছেঁচকি তৈরি করা হয়।
-তবে অনেকে বাড়িতে ছেঁচকিতে কালো সর্ষে ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দেওয়া হয়।
ছেঁচকির নামকরণ
বলা হয় যে গরম তেলে সব্জি ছাড়লে যে শব্দ হয় তার থেকেই পদটির নামকরণ হয় ছেঁচকি।
প্রসঙ্গত, মায়ের হাতের রান্নার দিনগুলো চোখের সামনেই ফুরিয়ে গেল৷ ছ্যাঁচড়া, ছেঁচকি, চচ্চড়ি, সুক্তো, ধোঁকা, দম, কচুরঘণ্ট, মুড়িঘণ্ট , মোচারঘণ্ট, লাবড়া, ডালনা, ভুনিখিচুড়ির মতো পদগুলো টুপটুপ করে ঝরে পড়ছে আমাদের সর্বজনীন ঘরোয়া মেনু থেকে। দ্রুতগতির পিছল রুটিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলি হিসেবে এসে গেছে ‘হেলদি ফুড ও টেস্টি ফুড ’ সকল।