ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মতোই ইউরিক অ্যাসিডে ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়লে সেখান থেকে একাধিক সমস্যার সূত্রপাত হয়। শরীরের বর্জ্য পদার্থ হল ইউরিক অ্যাসিড। পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার হজমের ফলে সেখান থেকে বর্জ্য হিসেবে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। সোজা কথায় প্রোটিন বিপাকের ফলে শরীরে তৈরি হয়ে যায় ইউরিক অ্যাসিড। ইউরিক অ্যাসিড প্রাকৃতিক ভাবেই শরীরের ভিতরে থাকে। এই ইউরিক অ্যাসিড পরিমাণে বেড়ে গেলে তখনই সমস্যা বেশি হয়।
পায়ে দেখা দেয় এর লক্ষণ
ইউরিক অ্যাসিড জমতে শুরু করলে প্রথমেই তার লক্ষণ পায়ে দেখা দেয়। পায়ের পাতা ফুলতে শুরু করে। আর ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে শুরু করলে ডায়াবেটিস-রক্তচাপের মতো একাধিক সমস্যা এসে যায়। এইসব কিছুর জন্য কিন্তু দায়ী আমাদের জীবন যাত্রা। অতিরিক্ত চাপ, খাদ্যাভ্যাস, কোনও রকম শরীরচর্চা না করা। আর সেখান থেকেই বাড়ছে এই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। এই সমস্যা যদি বাড়তে থাকে তবে পরবর্তীতে সেখান থেকে কিডনির সমস্যাও আসতে পারে। তবে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ শুধুমাত্র পায়ে নয়, এই লক্ষণ কানেও দেখা দিতে বলে। এমনটাই বলছেন চিকিৎসকেরা।
পা ছাড়া আর কোথায় লক্ষণ দেখা দেয়
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে অনেক সময় কানের পিছনের দিকে সাবুদানার আকৃতিতে ছোট গোল দানা দেখা দেয়। যা কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডেরই লক্ষণ। এই দানা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লাল রঙের হয়। কানের পাশাপাশি কনুই, হাঁটু এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় টোফাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই লাল দানায় কোনও রকম ব্যথা থাকে না।
আর কী কী হয়
এছাড়াও ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় গাউট হয়। গাউট হলে পায়ের পুড়ো আঙুলে মূলত সমস্যা হয়। সেই জায়গাটি ফুলে থাকে। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে কিডনিতে স্টোনের সম্ভাবনাও থেকে যায়। কারণ ইউরিক অ্যাসিডই কিডনির মধ্যে জমা হয়ে স্টোনের আকার নেয়। অনেক সময় পিঠে ব্যথার বা কোমরে ব্যথার সঠিক কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন রক্ত পরীক্ষা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। সিরাম ইউরিক অ্যাসিড টেস্টই হল এর উপযুক্ত পরীক্ষা। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৭ এর নীচে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ৬.৫ এর নীচে থাকা বাঞ্ছনীয়। এর থেকে বেশি হলেই তখন সমস্যা হয়।
এই সমস্যা এড়াতে যেগুলি খাবেন না
রোজ প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে
দিনের মধ্যে অন্তত একবার একগ্লাস লেবুজল অবশ্যই খান
মাটন, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ, হাই প্রোটিন, মুসুর ডাল, ডিমের কুসুম এসব এড়িয়ে চলতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান। নিজের ইচ্ছেমত ওষুধ খাবেন না। বছরে অন্তত দুবার অবশ্যই ইউরিক অ্যাসিড পরীক্ষা করিয়ে নেবেন