Darjeeling Toy Train Ticket Crysis: শেষ আর্থিক বছরে আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল দার্জিলিংয়ের টয়ট্রেন। সেই সঙ্গে নয়া রেকর্ড কায়েম করেছিল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (Darjeeling Himalayan Railway)। টয়ট্রেনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব অর্জনের রেকর্ড করেছিল তারা। মাঝে কয়েক মাস নানা কারণে রাইড কম থাকায় কিছুটা ঘাটতি তৈরি হলেও ফের স্বমহিমালয় হেরিটেজ টয়ট্রেন।
গরমের শুরু থেকেই টয়ট্রেনের চাহিদা বাড়ছিল। পাহাড়ে টিকিটের হাহাকার শুরু হয়েছে টয়ট্রেনের। অনলাইন বুকিং করার সুবিধা থাকায়, আচমকা কেউ চাইলে আর টিকিট পাচ্ছেন না। তখন টয়ট্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেই মন ভরাতে হচ্ছে পর্যটকদের একটা বড় অংশকে। টিকিট না পেয়ে মন খারাপ অনেকেরই। মে মাসের আগামী ২০-২২ তারিখ পর্যন্ত জয়রাইডের (Toy train Joyride) কোনও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি জয়রাইড চালানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে টয়ট্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বর্তমানে ৮টি জয়রাইড চলে দার্জিলিং এবং ঘুমের মধ্যে। যার মধ্যে চারটি স্টিম ইঞ্জিনে চলে। ডিএইচআর সূত্রে খবর, শুধু বিদেশি পর্যটক নন, দেশের পর্যটকদের কাছেও দিন দিন চাহিদা বাড়ছে টয়ট্রেনের। ডিএইচআর-এর ডিরেক্টর একে মিশ্র জানিয়েছেন এতটা ক্রাইসিস তৈরি হবে আমরা বুঝতে পারিনি। পর্যটকদের উৎসাহ বেড়েছে তাই বাড়তি জয় রাইড চালানো যায় কিনা সেটা বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানিয়েছেন টয়ট্রেনের চাহিদা বরাবরই বেশি থাকে। তবে বিভিন্ন রকম সমস্যার জন্য এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাদ দিলে বাকি সময় ট্রেন যাতে সুনির্দিষ্টভাবে চলতে পারে সে বিষয়ে রেলের নজর দেওয়া দরকার। তাহলে আরও রাজস্ব আয় হবে। পর্যটকরাও খুশি হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের (NF Railway) ইউনেস্কো হেরিটেজ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (DHR) শেষ আর্থিক বছরে ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত ডিএইচআর-এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ উপার্জন এবং যাত্রীদের সংখ্যা চিহ্নিত করেছে। ডিএইচআর আগের সমস্ত রেকর্ড অতিক্রম করে প্রায় ১৭.৩ কোটি টাকার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রাজস্ব অর্জনের রেকর্ড করেছে।
বেড়েছে জয়রাইড ও দৈনিক পরিষেবা
বেশি করে জয়রাইড পরিষেবা চালু করার জন্য উপার্জন বৃদ্ধিও হয়েছে। এই পিক সিজনে পর্যটকের প্রচুর আগমন এবং যাত্রী সমাগম বৃদ্ধির ফলে আয় বৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে, ডিএইচআর-এ নিউ জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং-এর মধ্যে দৈনিক পরিষেবা এবং দার্জিলিং ও ঘুমের মধ্যে জয় রাইড পরিষেবাগুলি পরিচালিত হচ্ছে৷ ডিএইচআর স্টিম জঙ্গল টি সাফারি, রেড পান্ডা, হিম কন্যা ইত্যাদির মতো বিশেষ পরিষেবাও চালু করেছে। চার্টার ট্রেন, বিশেষ ফিল্ম শুটিং ট্রেন, হেরিটেজ ডাইনিং কারও হল ডিএইচআর সেকশনে প্রদান করা কিছু আকর্ষণীয় পরিষেবা।
টয়ট্রেন রেস্তোরাঁর আকর্ষণ বেড়েছে
ডিএইচআর-এ অধিক পর্যটকদের আকর্ষণ করতে দার্জিলিং-এ একটি নতুন কোচ রেস্তোরাঁ এবং কার্শিয়াং-এ একটি হেরিটেজ রেস্তোরাঁ খোলা হয়েছে৷ ঘুম উইন্টার ফেস্টিভ্যাল গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত সফলভাবে আয়োজন করা হয়। স্থানীয় জনসাধারণ এবং বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা বিপুল উৎসাহের সঙ্গে উৎসবে অংশ নেন। বিশাল জনসাধারণের আগমনে ডিএইচআর সেকশনের পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচারের ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে।
পরিষেবার উন্নতি
দেশ-বিদেশে ডিএইচআর-এর প্রচারের জন্যও বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে পর্যটন বৃদ্ধি করার জন্য, নতুন কোচ প্রবর্তন এবং নতুন পরিষেবাগুলি শুরু করা হয়েছে। দার্জিলিং স্টেশনকে হেরিটেজ টাইপ উইন্ডো, কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্ট ইত্যাদির মতো নতুন সুবিধার সঙ্গে আপগ্রেড করা হচ্ছে। ঘুম স্টেশনের আপগ্রেডেশনও চালু রয়েছে। এর সংরক্ষণ এবং ঐতিহ্য মূল্যকে প্রচার করার জন্য স্টেকহোল্ডার, ট্যুর অপারেটর, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, স্থানীয় জনসাধারণ ইত্যাদির সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিয়মিতভাবে করা হচ্ছে।