Tourism Malda Adina Park: পুজোর আগেই আরও একটি সুখবর। মালদা জেলাকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে আনতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। তার মধ্যে অন্যতম হল, আদিনা ইকো পার্ককে নবরূপে সাজিয়ে তোলা ও তা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া। রবিবার ছুটির দিনে বিশেষ পরিছন্নতার অভিযানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো আদিনা ইকো পার্কের উদ্বোধন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা শাসক নিতিন সিংহানিয়া, রাজ্যের উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দপ্তরের চেয়ারম্যান রঞ্জিত সরকার, রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সহ অতিরিক্ত জেলা শাসক, গাজোল ব্লকের বিডিও সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
এদিন জেলাশাসক এই ইকো পার্কের বোটিং থেকে শুরু করে বাচ্চাদের খেলাধুলার যাবতীয় সরঞ্জাম ও খাবারের ক্যান্টিন সহ বিভিন্ন জিনিসের উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, মালদা জেলায় এই ইকো পার্কে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইচ্ছে থাকলে এখানে আপনারা এসে থাকতে পারেন। রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, কলকাতায় ইকোপার্ক রয়েছে। সেই তুলনায় ছোট হলেও মালদা ইকোপার্কটি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। একবার এসে থেকে দেখুন, এখানে সবরকম ব্যবস্থা রয়েছে। আপনাদের থাকা খাওয়া বোটিং ও বাচ্চাদের জন্য খেলার সামগ্রিক।
কীভাবে বুকিং?
নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা আদিনা ইকোপার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল রবিবার। পাশাপাশি এদিন থেকে অনলাইন এবং অফলাইন বুকিং চালু হল আদিনা ইকোপার্কের ভেতরে থাকা সুসজ্জিত গেস্ট হাউসের। আদিনা ইকোপার্ককে ঘিরে মালদা জেলায় দুটি টুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
কী কী দেখবেন এখানে?
জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মালদা জেলাকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে আনার জন্য আরও বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। ইকোপার্ককে কেন্দ্র করে জেলায় আদিনা এবং গৌড় এই দুটি সার্কিট গড়ে তোলা হচ্ছে। আদিনা মসজিদ সহ এখানকার স্থাপত্য, ইকোপার্ক, ডিয়ার পার্ক, জগজীবনপুর এবং হস্ত শিল্পকলা সমৃদ্ধ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরিয়ে দেখানো হবে। পাশাপাশি গৌড়কে কেন্দ্র করে সেখানকার ১২টি স্থাপত্য, রামকেলি যেমন দেখানো হবে তেমনই কালিয়াচকের রেশম শিল্প পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হবে। এছাড়াও নয়াবাদ এবং হবিবপুরের হিজল বনকেও পর্যটন মানচিত্রে যোগ করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে এই বিষয়ে ২৬৪ জন টুরিস্ট গাইড তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এদের ট্যাগ করা হচ্ছে। মালদা জেলায় দেখার মতো প্রচুর জায়গা রয়েছে। পর্যটকদের সামনে সেসব তুলে ধরব আমরা। ইকোপার্কে নিরাপত্তার মধ্যে পর্যটকরা থাকতে পারবেন। আদিবাসী মহিলারা এখানে রান্নাবান্নার দায়িত্ব রয়েছেন। তারা পর্যটকদের পছন্দমতো খাবার সরবরাহ করবেন। এদিন থেকে ইকোপার্কের অনলাইনে এবং অফলাইন বুকিং শুরু হল।‘
আদিনা পার্কের ইতিহাস
মালদা থেকে ২০ কিমি উত্তরে অবস্থিত এই আদিনা। এই অঞ্চলটির অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আদিনা মসজিদ অন্যতম।সিরিয়ার উমাইয়া মসজিদের আদলে তৈরি এই আদিনা মসজিদটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ ও সর্বাধিক প্রাচীন বলেও দাবি ইতিহাস গবেষকদের।এই মসজিদের পাশেই প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা হচ্ছে এই ইকো পার্ক।
পুজোর মরশুমে পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করার জন্য এখানে বহু নতুন জিনিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পার্কের জমিতে লাগানো হয়েছে নানান ফল ও ফুলের বাহারি গাছ এবং দেওয়া হয়েছে তাদের বিজ্ঞানসম্মত নামও। প্রজাপতির লার্ভা দিয়ে প্রজাপতি পার্ক তৈরি করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সারাদিনের ক্লান্তির পর পর্যটকেরা যেন দু'দণ্ড স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারে তার জন্য পার্কের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ঝাঁ চকচকে গেস্ট হাউস। দশমীর পরেও মায়ের চলে যাওয়ার দুঃখ বহুদিনের জন্য মানুষের মনে স্থায়ী হয়ে থেকে যায়। কচিকাঁচারাও যেন মুহুর্তের মধ্যে ঝিমিয়ে পড়ে।বড়রাও এর প্রভাব থেকে বাদ যায় না। তাই মন খারাপের এই রেশ কাটানোর জন্য আদিনা পার্ক পর্যটকদের কাছে এবারের পুজোয় তাক লাগানো উপহার বলা যেতেই পারে।