পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে এক চরম বিশৃঙ্খলা ও অশান্তির সাক্ষী থেকেছে ভাঙড়। লাঠি-সোঁটা থেকে শুরু করে গুলি-বোমাবাজি, কিছুই বাদ যায়নি। এমনকি মৃত্যুও দেখেছে ভাঙড়। আর এর মাঝেই ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার নামও উঠে এসেছিল। আর সেই শওকত মোল্লাকেই শনিবার , ভাঙড়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তবে এখানেই শেষ নয়, ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লাকে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপরেই তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট করা হয়, ভাঙড়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থাকছে শওকত মোল্লার উপর। প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম নন, বরং ভাঙড় উদ্ধারে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার সঙ্গে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছে ঘাসফুল শিবির।
দায়িত্ব বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই শওকত মোল্লার নিরাপত্তাও বাড়ান হয়েছে। জানা গিয়েছে, ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ককে এবার থেকে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে শওকত মোল্লার নিরাপত্তা বৃদ্ধি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
জানা যাচ্ছে শনিবার দলীয় বৈঠকে সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি হাজির ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ সেই বৈঠকেই মমতা বলেন, ‘পঞ্চায়েতে সব্যসাচী (দত্ত) এ বার থেকে ভাঙড়টাও দেখবে। ও আগে তো ভাঙরটা দেখত। শওকত তোমার সঙ্গে সব্যসাচী থাকবে। তুমি কী করছ, তার দিকে দলের নজর রয়েছে।’ সূত্রের খবর, শওকত মোল্লাকে উদ্দেশ্য করে এমনটাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে দফায় দফায় তপ্ত হয়েছে ভাঙড়। চলছে গুলি, বাদ যায়নি বোমাবাজিও। এমনকী, মনোনয়নের শেষ দিনে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ভাঙড়ে। ভাঙড়ে অশান্তির ঘটনায় আইএসএফ এবং তৃণমূল একে অপরকে নিশানা করছে। সন্দেহ নেই তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙড়ের দু’টি ব্লক। গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ- তিনটি স্তরেই আইএসএফের জোর টক্করের মুখে পড়তে হচ্ছে শাসকদলকে। তাছাড়া ভাঙড়ের বোমা-বন্দুকের আস্ফালন, পাল্টা শক্তি প্রদর্শন চলছে। যেন সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। সেই আবহে শওকতের মতো দাপুটে নেতার নিরাপত্তা জোরদার করা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত অনেকের।