আবারও হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, আপনি চাপ নিতে না পারলে ছেড়ে দিন। রাতে জানা যায়, রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চায়েতের একটি মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন,'পঞ্চায়েত ভোট কি হচ্ছে? নির্বাচন কমিশনার পদে তিনি (রাজীব সিনহা) কি এখনও আছেন? কী হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না।' দুপুর ২টোর মধ্যে কমিশনকে জবাব দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজীব সিনহার উদ্দেশে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছিলেন,'যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা মেনে কাজ না করতে পারলে পদ থেকে সরে যান।' রাজভবন সূত্রের খবর, রাতে রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠান। এই আবহেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিস্ময়প্রকাশ করেন,'নির্বাচন কমিশনার আছেন এখনও? কমিশনে পঞ্চায়েত ভোটের নামে জানি না কী হচ্ছে এসব। নির্বাচন প্রক্রিয়া কি এখনও চলছে?'
ভাঙড়ে ৮১ জন আইএসএফ কর্মীর মনোনয়ন বাতিল করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। ভাঙড়ে আইএসএফ কর্মীরা যাতে নিরাপদে মনোনয়ন পেশ করতে পারেন সেজন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই নির্দেশ মোতাবেক ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ভাঙড় ২ ব্লকের ৮১ জন আইএসএফ কর্মী। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, স্ক্রুটিনিতে কোনও ভুল ধরা পড়েনি। তা সত্ত্বেও ২০ জন কমিশনের ওয়েবসাইটে নিজেদের নাম দেখতে পাননি আইএসএফ কর্মীরা। ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তার পরই বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, কীভাবে একসঙ্গে এত প্রার্থীর নাম বাতিল হল তা বেলা ২টোর মধ্যে জানাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠানোর পর কি পদত্যাগ করবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নে বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানান, 'এমন কোনও তথ্য পাইনি।' বলে রাখি, রাজভবনের অনুমোদনের পর রাজীব সিনহাকে পদে বসিয়েছিল নবান্ন। তার পর তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট যায় রাজ্যপালের কাছে। তাতে সই না করে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস।