শোনা যায়, ব্রিটিশ আমলে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ধরা পড়ার আগে গোপন নথি খেয়ে ফেলতেন। যাতে তা ব্রিটিশদের হাতে না পড়ে। এই ঘটনা সেরকমই। তবে কারণ আলাদা। সিপিএম প্রার্থীর কাছে ৪ ভোটে হেরে যাচ্ছেন, বুঝতে পেরে গণনা চলাকালীন এক বাণ্ডিল ব্যালট পেপার থেকে বেশকিছু পেপার মুখে পুরে চিবিয়ে গিলে ফেলেন তৃণমূল প্রার্থী। ঘটনার পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছি রাজ্যজুড়ে। উত্তর ২৪ পরগনার ওই তৃণমূল প্রার্থীর নাম মহাদেব মাটি।
জানা যাচ্ছে, ওই পঞ্চায়েতে এগিয়ে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মজুমদার। তিনিই জিততেন বলে জানা যাচ্ছে। ৪ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হচ্ছে সিপিএম প্রার্থী, তা বুঝতে পেরেই ব্যালট চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি। এই ঘটনায় হতবাক সিপিএম প্রার্থী থেকে শুরু করে উপস্থিত সকলেই। ওই ঘটনার পর গণনা স্থগিত রাখা হয়েছে। এখনও কাউকে জয়ী ঘোষণা করা হয়নি।
ওই জেলার ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েতের ৩১ নম্বর বুথের ঘটনা। সিপিএমের অভিযোগ, তার পরেই ব্যালটের একটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে কিছু ব্যালট মুখে পুরে চিবোতে থাকেন। বান্ডিলের বাকি ব্যালট ছড়িয়ে দেন ঘরে। গোটা ঘটনায় হতবাক জয়ের মুখে থমকে যাওয়া সিপিএম প্রার্থী। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘২ নম্বর ঘরের ৭ নম্বর টেবিলে গণনা চলছিল। কাউন্টিং শেষ হওয়ার পর আমি ৪ ভোটে জিতি। ওরা রিকাউন্টিংয়েরও দাবি করেনি। মহাদেব মাটিকে দেখলাম ঘরে ঢুকে, কারও পরোয়া না করে, আমার বক্সের থেকে একটি বান্ডিল তুলে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিল! কিছুটা ফেলে দিল। তার পর আবার বাইরে চলে গেল। এই অবস্থায় কাউকে জয়ী ঘোষণা করেনি প্রশাসন। থমকে আছে।’’
সূত্রের খবর, গণনা চলাকালীন হারের খবর পেয়ে কেন্দ্রে ঢোকেন তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব। ৭ নম্বর টেবিলের কাছে এসে তিনি দাঁড়ান। তাঁর সামনেই রাখা ছিল ২৫টি করে ব্যালটের একাধিক বান্ডিল। মুহূর্তের মধ্যে তেমনই একটি বান্ডিল হাতে তুলে নেন মহাদেব। তার পর বান্ডিল ছিঁড়ে কিছু ব্যালট পুরে দেন সোজা মুখে। চিবোতে চিবোতেই বান্ডিলের বাকি ব্যালট আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেন। তারপর বেরিয়ে যান ঘর থেকে।
ব্যালট পেপার তো কোনও খাবার নয়। তা সত্ত্বেও ওই কাগজ খেয়ে ফেলে কেমন আছেন মহাদেব, তা জানার চেষ্টা করা হয়েছিল তবে তাঁর তরফ থেকে কোনও খবর মেলেনি। মহাদেব কাউকে কিছু জানায়নি বলেই খবর। পেপার খাওয়ার পর থেকে তিনি ভয়ে ভয়ে ছিলেন কী না, বা তাঁর পেটে কোনও সমস্য হয়েছে কী না, তাও জানা যায়নি।