রাজ্যে এবারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট হবে এই সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সেই নির্দেশই বহাল রেখেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এবার পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাইকোর্ট। পঞ্চায়েত ভোটের হিংসায় এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে আদালতে মামলা করেছিল বিরোধীরা। তাতেই কলকাতা হাইকোর্ট মন্তব্য করে, নির্বাচন ঘিরে হিংসার ঘটনা ঘটলে সেই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সেই মামলার শুনানিতেই হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা বলেন, 'অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ এমনকি, প্রার্থীরা অশান্তির জন্য মনোনয়ন জমা দিতে না পারলে তাঁদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।
বুধবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। নির্বাচনী নথি বিকৃত করার অভিযোগের একটি নির্দিষ্ট মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন তিনি। সিবিআইকে ৭ তারিখের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলায় নথি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। সেই কারণে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, সরকারি আধিকারিকে বিরুদ্ধে নথি বিকৃতি করার অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণে রাজ্য সরকারকে এই তদন্তের ভার দেওয়া উচিত হবে না।
বুধবার, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ও সন্ত্রাস নিয়ে ফের একবার কড়া মন্তব্য করে কলকাতা হাইকোর্ট। উলুবেড়িয়ার একটি ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে কাশ্মীরা বিবি ও ওমজা বিবি নামের দু’জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, স্ক্রুটিনিতে তাঁদের ফর্ম বাতিল করে দেওয়া হয়। এই দুই প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁরা যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তা বিকৃত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি।
এদিকে ভাঙড়ের প্রায় ১৬-১৭ জন সিপিএম প্রার্থীর নাম কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে উধাও বলে অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়ন জমা এবং সিম্বল অ্যালটমেন্ট হয়ে যাওয়ার পরেও গতকাল থেকে ওয়েবসাইটে নাম নেই প্রার্থীদের। প্রার্থী তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাঙড়ের কয়েকজন সিপিএম প্রার্থী। বুধবার তাঁদের হয়ে আদালতের সওয়াল করেন সিপিএম নেতা ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। শুনানির পর সন্ত্রাস প্রসঙ্গে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। এমনকী 'নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত' বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ওই প্রার্থীরা যাতে নির্বাচনে লড়তে পারেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সেই নির্দেশও দেন বিচারপতি।