West Bengal Panchayat Poll 2023: চলতি পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘোষণার দিন থেকে শুরু হয়েছে অশান্তি। রাজ্যে দফায় দফায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে একাধিক। যা নিয়ে প্রতিদিনই তরজা চলছে। উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যপালও। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এর মধ্যে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা গেল উত্তরবঙ্গের মালদাতে। যা প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেখানে তৃণমূল সহ অন্যান্য় দলের প্রার্থীর দেওয়াল লিখে দিচ্ছেন একই আসনের সিপিএম প্রার্থী। পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখছেন তৃণমূল প্রার্থীও। দুজনেই খুশি। হাসিমুখে দেওয়াল লেখাচ্ছেন ও লিখছেন। যা দেখে খুশি রাজ্যবাসীও।
ব্যাপারখানা কী?
মালদার হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২২ নম্বর বুথে এবার সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন পুলক সরকার। দেখা গেল তিনি নিজের দেওয়াল যেমন নিজেই লিখছেন, তেমনই শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থীরও দেওয়াল লিখে দিচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে কাজ দেখছেন ওই তৃণমূল প্রার্থী। কোথাও কোনও বিরোধ নেই। যিনি লেখা চ্ছেন আর যিনি লিখে দিচ্ছেন দুজনেই খুশি। দুজনেই জানিয়ে দিয়েছেন, লড়াই হবে রাজনৈতিক মতাদর্শের। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির কোনও বিরোধ নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে কেমন অবিশ্বাস্য শোনাচ্ছে না?
মতাদর্শগতভাবে কঠোর বামপন্থী পুলক সরকার। তবে তিনি পেশাগতভাবে একজন চিত্রশিল্পী। ভোটে প্রার্থী হলেও পেশাদারিত্ব ছাড়েননি। এলাকায় তাঁর হাতেই হচ্ছে সিপিএম, তৃণমূল এমন কি বিজেপি প্রার্থীদেরও সমর্থনে দেওয়াল লিখন। দিনভর নিজের ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেওয়াল লিখছেন। আর সন্ধ্যের পর বেরিয়ে পড়ছেন নিজের ভোট প্রচারে।
কী বলছেন সিপিএম প্রার্থী?
সিপিএম প্রার্থীর কথায় ভোট ভোটের জায়গায়, আর পেশাদারিত্ব বিষয়টি আলাদা। ফলে প্রার্থী হয়েছেন বলে, পেশা ছাড়বেন এমন নয়। শুধু তৃণমূল নয় বিজেপিরও দেওয়াল তিনিই লিখছেন। আর তাঁর পেশাদারিত্ব আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনও আপত্তি বা বিরোধ নেই তৃণমূল কিংবা বিজেপিরও।
কী বলছেন তৃণমূল প্রার্থী?
তাঁর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীও। একই বুথের তৃণমূল প্রার্থী বিবেক সিংয়ের কথায়, ‘পুলকবাবু রাজনৈতিক কর্মী হলেও পেশাগত শিল্পী। নিজেদের মধ্যে সৌজন্য যথারীতি বজায় রয়েছে। কে জিতবেন, তা মানুষের ভোটে ঠিক হবে। তার বাইরে কোনও সমস্যা নেই।"
লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েতে সবার ভরসা পুলকই
লোকসভা, বিধানসভা হোক বা পঞ্চায়েত ভোট। সবক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলির দেওয়াল লেখেন পুলকবাবুই। এবারও দেওয়াল পিছু নিচ্ছেন ৩০০ টাকা করে। এক একটি দলের তরফে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে আয় করবেন তিনি। কলেজ জীবন থেকেই এসএফআই-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বামপন্থী রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পরে ডিওয়াইএফআই- এরও জেলা নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। এখন সিপিএম পার্টির সক্রিয় সদস্য। তবে কোনওদিন ভোটে দাঁড়াননি। এবার প্রথম প্রার্থী করেছে দল। তাতে অবশ্য তাঁর পেশা থেকে সরতে নারাজ তিনি। আর তাঁর সিপিএম প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর হাতের কাজ ভাল, তাই তাঁকে হাতছাড়া করতে চান না প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীরাও।