সৌরমণ্ডলে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি অনুপ্রবেশকারী ধূমকেতু। এটাই এ পর্যন্ত সবচেয়ে ধূমকেতু বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। বৈজ্ঞানিক নাম কমেট সি/২০১৪ ইউএন২৭১ (Comet C/2014 UN271)। এই ধূমকেতুর প্রথম খোঁজ পেয়েছিলেন পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের ছাত্র পেড্রো বারনারডিনেলি ও জ্যোর্তিবিজ্ঞানী গ্যারি বার্নস্টেইন। তাই নাম দেওয়া হয়েছে, বারনারডিনেলি-বার্নস্টেইন ধূমকেতু। (ছবি- NOIRLab/NSF/AURA/J. da Silva/Spaceengine)
প্যারিস অবজারভেটারির বিজ্ঞানী ডক্টর ইমানুয়েল লেলৌউচ বলেন, আমাদের গণনা সঠিক। প্রথমে ভেবেছিল এটার ব্যাস ১০০ কিলোমিটার। কিন্তু পরে জানতে পেরেছি এটা ১৩৭ কিলোমিটারের ব্যাস। এটির খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল ২০১৪ সালে। কিন্তু গতবছর সৌরমণ্ডলে গতবছর সেটি প্রবেশ করেছে। এতটা কাছ থেকে আগে দেখা যায়নি। উর্ট ক্লাউড (Oort Cloud) থেকে এসেছে এই ধূমকেতুটি (Comet)। (ছবি- NASA/JPL)(
চিলির সেরো টোলোলো ইন্টার-আমেরিকান অবজার্ভেটরির ডার্ক এনার্জি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ধূমকেতুটি। ব্যাস ১৩৭ কিলোমিটার। সূ্র্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের ২০ গুণ বেশি দূর থেকে চলে যাবে এই ধূমকেতু। টেলিস্কোপে দেখা যাচ্ছে নীল রঙের বিন্দু। ২০৩১ সালের ২৩ জানুয়ারি সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। (ছবি- NOIRLab/NSF/AURA/J. da Silva/Spaceengine)
হার্বার্ড অ্যান্ড স্মিথসোনিয়ন সেন্টার অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স পিটার ওয়ার্স জানান, এই ধূমকেতুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমাদের কাছে ২০ বছর সময় আছে। এটা বেশ রোমাঞ্চকর হতে চলেছে। ধূমকেতুর চারপাশে বরফ লেগে রয়েছে। (ছবি গেটি)
ধূমকেতুর (Bernardinelli-Bernstein Comet) প্রথম খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল ২০১৪ সালে। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তার উপর নজরদারি করেছিলেন দুই বিজ্ঞানী। নীল বিন্দুই চোখে পড়েছে। কাছাকাছি আসার পর তথ্যাদি পাঠানো হয়েছিল মাইনর প্ল্যানেট সেন্টারে। যাতে জানা যায়, এটি গ্রহাণু কিনা। (ছবি গেটি)
মাইনর প্ল্যানেট সেন্টারের গবেষক পিটার ওয়ার্সের বক্তব্য, রাসায়নিকভাবে এটি নিষ্ক্রিয়। কিন্তু একটি ধূসর পুচ্ছ রয়েছে। এটি গ্যাস হতে পারে। এখানেই প্রশ্ন, রাসায়ানিকভাবে নিষ্ক্রিয় হলে গ্যাস কোথা থেকে এল? সূর্যের প্রচণ্ড তাপ ও ঘর্ষণ বলের প্রভাবে পিছনে এই ধরনের লেজ তৈরি হয়। (ছবি গেটি)
পিটার জানান, যত সূর্যের কাছাকাছি ধূমকেতু তত সক্রিয় হয়ে উঠছে। সূর্যের চারপাশে চক্কর দিতে ৫৫ লক্ষ বছর লাগবে এই ধূমকেতুর। সূর্যের থেকে এক অলোকবর্ষ দূর দিয়ে পাশ হবে। হতে পারে এই ধূমকেতুটি সৌরমণ্ডলের অংশ ছিল। কিন্তু নেপচুন ও শনির মহাকর্ষে বলের প্রভাবে বাইরে চলে গিয়েছিল এটি। (ছবি গেটি)
পিটার জানান, আপাতত এব্যাপারে বেশি জানা যায়নি। সূর্যের পিছন থেকে দিকে চলে যাওয়ার আগে অধ্যয়নের জন্য ২০ বছর হাতে রয়েছে। সাধারণত সূর্যমণ্ডলের বাইরে চক্কর কাটে ধূমকেতু। এটি ভিতরে চলে এসেছে। (ছবি গেটি)
এই ধূমকেতু (Bernardinelli-Bernstein Comet) একপ্রকার টাইম ক্যাপসুল যা হাত থেকে বেরিয়ে গেলে হদিশ পাওয়া মুশকিল। কারণ এটি ফিরবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। (ছবি গেটি)
আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। ধূমকেতুর উপরে টেলিস্কোপ দিয়ে নজর রাখা হচ্ছে। ফলে গতিপথে বদল আসলে তা ধরা পড়বে। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে আইএফএল সায়েন্সে (IFLScince)। (ছবি নাসা)