দ্বিতীয় দফার ভোটের মাঝেই এবার সন্দেশখালির ময়দানে এনএসজি! শেখ শাহজাহানের গড়ে বিস্ফোরকের খোঁজে পৌঁছ গিয়েছে এনএসজি-র বম্ব স্কোয়াড। সন্দেশখালির যে বাড়িটিতে অস্ত্রভাণ্ডারের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, সেই বাড়িটি ঘিরে ফেলেছেন আধিকারিকরা। ভেড়ির আশপাশে এলাকাও ঘিরে ফেলা হয়েছে। বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় স্ক্যানার দিয়ে তল্লাশি চালান হচ্ছে। বিস্ফোরকের সন্ধানে কাজে লাগানো হচ্ছে রিমোট চালিত রোবটও।
এই কমান্ডোদের কথা উঠলে মাথা থেকে পা পর্যন্ত কালো পোশাক পরিহিত সৈন্যদের ছবি আমাদের মনে ভেসে ওঠে। হাতে বন্দুক, পিঠে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ ভর্তি ব্যাগ, এরা এমন কমান্ডো যারা যেকোনো বিপদের সঙ্গে লড়াই করতে সদা প্রস্তুত। দেশে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলা করার জন্য ১৯৮৪ সালে NSG তৈরি করা হয়েছিল। কমান্ডো এনএসজিকে 'নেভার সে গভ আপ'ও বলা হয়। ভারতের এই সবচেয়ে বিপজ্জনক কমান্ডোরা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য ভিভিআইপি ব্যক্তিদের সবাইকে রক্ষা করার জন্য মোতায়েন থাকেন। একই সময়ে, জঙ্গি হামলার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ব্ল্যাক ক্যাট কমান্ডোরা অপারেশন চালায়।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (NSG) এর ভূমিকা ও দায়িত্ব কি?
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকি থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য তারা নিরন্তর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, NSG দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এই কাজগুলি NSG করে থাকে-
প্রসঙ্গত, এনএসজি-র তিনটি শাখা রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে বম্ব ডিসপোজাল এবং ডিটেকশন স্কোয়াড। এই স্কোয়াডের লোকজন আগেই পা রেখেছিল শাহজাহান গড়ে। এদিন বিকাল ৪টে নাগাদ আরও জওয়ানদের অত্যাধুনিক সব অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মাঠে নামতে দেখা যায়। সন্দেশখালিতে যেখানে অস্ত্র রয়েছে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকও পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, সেই বিস্ফোরক নিরাপদে সংগ্রহ করা, নিরাপদে নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া এবং সেই বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার কাজ করছে এনএসজির বম্ব ডিসপোসল এবং ডিটেকশন স্কোয়াড। নামানো হয়েছে রোবোটও। প্রসঙ্গত, এর আগে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ক্ষেত্রেও বর্ধমান শহরের বাদশাহী রোডে যে বিপুল পরিমাণ আইইডি পাওয়া গিয়েছিল, সেই আইইডি-ও এনএসজি-র বিশেষজ্ঞরা সংগ্রহ করেছিলেন। নিরাপদে তা দামোদরের চড়ে নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। এছাড়াও যে কোনও বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রয়োজন মনে করলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা, এনএসজি বিশেষজ্ঞদের ডাকেন। পদক্ষেপের জন্য নেওয়া হয় পরামর্শ। কোন পদ্ধতিতে এই বোমা তৈরি হয়েছে, তার অভিঘাত কতটা হতে পারে, নিষ্ক্রিয় করার সময় কী কী সাবধানতা নেওয়া প্রয়োজন তা জানতে মূলত এনএসজির এই বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়ার্ডের সাহায্য নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক বেঙ্গালুরুতে ক্যাফে বিস্ফোরণেও এনএসজির ডাটা সেন্টারের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কী ধরনের আইডি ব্যবহার করা হয়েছে এবং কি ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে সেটা জানতে পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের। এ ক্ষেত্রেও সন্দেশখালিতেও সেই সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
সেনাবাহিনীর বিশেষ সৈন্য নির্বাচিত হন NSG-তে
এনএসজি কমান্ডোদের জন্য সরাসরি নিয়োগ নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর বিশেষ সৈন্যদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এনএসজিতে নির্বাচিত কমান্ডোদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর এবং বাকি ৪৫ শতাংশ সিআরপিএফ, আরএএস, আইটিবিপি এবং বিএসএফ-এর। কমান্ডো প্রশিক্ষণ নিতে হলে সেনাবাহিনীতে কমপক্ষে ১০ বছর কাটাতে হয়।
এনএসজি কমান্ডো হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা: